Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গৌতমের অগ্রিম টাকা উদ্ধারে ইডি 

এই ধরনের সম্পত্তির তালিকায় দিল্লির একটি হোটেল রয়েছে, ভিন্‌ রাজ্যের জমি রয়েছে, কলকাতায় বিলাসবহুল বহুতলে অনেক জায়গা জুড়ে নেওয়া একটি অফিসও রয়েছে। ওই সব সম্পত্তি কেনার অগ্রিম টাকা অবিলম্বে ফেরত চায় ইডি।

রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। —ফাইল ছবি

রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। —ফাইল ছবি

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০৬:১৬
Share: Save:

কিছু সম্পত্তি কেনার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। কিন্তু তিনি গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় সেই সব সম্পত্তি আর কিনে ওঠা হয়নি। অথচ তাঁর অগ্রিমের টাকা দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে কিছু ব্যক্তি বা সংস্থার অ্যাকাউন্টে। এখন সেই সব লোক ও সংস্থার খোঁজ চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। যাঁদের সন্ধান মিলছে, তাঁদের কাছ থেকে গৌতমের দেওয়া টাকা ফেরত চাইছে ইডি। অনেকে ফেরত দিচ্ছেন। যাঁরা দিচ্ছেন না, তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এই ধরনের সম্পত্তির তালিকায় দিল্লির একটি হোটেল রয়েছে, ভিন্‌ রাজ্যের জমি রয়েছে, কলকাতায় বিলাসবহুল বহুতলে অনেক জায়গা জুড়ে নেওয়া একটি অফিসও রয়েছে। ওই সব সম্পত্তি কেনার অগ্রিম টাকা অবিলম্বে ফেরত চায় ইডি। উদ্দেশ্য, যতটা সম্ভব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি-র হেফাজতে রাখা।

ইডি সূত্রের খবর, একটি ছাতার তলায় ২৭টি সংস্থা ফেঁদে বসেছিলেন গৌতম। তিন হাজারের বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। ২০১৫ সালের গোড়ায় রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে ইডি। চার বছর পরে সব হিসেব একত্র করে ইডি এখন জানতে পারছে, বাজার থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা তুলেছিলেন গৌতম। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, ত্রিপুরা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষকে বিভিন্ন প্রকল্পে শামিল করার প্রলোভন দেখিয়ে এই বিশাল অঙ্কের টাকা তোলা হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট লোকজনকে সুদ-সহ ফেরতও দিয়েছেন গৌতম। তাঁর গ্রেফতারির আগে তো বটেই, পরেও অনেকে টাকা ফেরত পেয়েছেন। বাকি প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকার মধ্যে দেড় হাজার কোটির কিছু বেশি মূল্যের সম্পত্তি প্রথমেই বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজারদর ধরলে সেই মূল্য আরও কিছু বেশি হবে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। কিন্তু বাকি সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযোগ, ওই টাকার মধ্যে একটা বড় অংশ গিয়েছে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পকেটে। গৌতম বাকি টাকা কর্মীদের বেতন, নিজের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা, বিদেশভ্রমণ খাতে খরচ করেছেন বলে জানাচ্ছে ইডি। কিন্তু সেগুলো মিলিয়েও সাড়ে চার হাজার কোটি হওয়ার কথা নয়। ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ গ্রেফতার হওয়ার আগে গৌতম সম্পত্তি কেনার জন্য বিশাল অঙ্কের যে-টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন, তা ফেরত চাইতে শুরুও করে ইডি। কিন্তু বহু ব্যবসায়ী সামান্য কিছু টাকা ফেরত দিয়ে চুপ করে গিয়েছেন। তাঁদের সেই সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে নেমেছে ইডি।

তদন্তকারী সংস্থা এমন লোকেরও খোঁজ পেয়েছে, যিনি ভিন্‌ রাজ্যে জমি-বাড়ি-হোটেল কেনার ক্ষেত্রে গৌতমের হয়ে মধ্যস্থতা করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সেই ব্যক্তি এখন ভোপালের জেলে বন্দি।

জেলে গিয়ে তাঁকে জেরা করার জন্য ইডি এ বার ভোপালের আদালতে আর্জি জানাতে চলেছে ওই সংস্থা সূত্রের খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Rose Valley Scam ED Gautam Kundu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE