শাহজাহান শেখের বাড়িতে অনেকগুলি তালা ভাঙতে হয়েছে ইডিকে। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বুধবারও পদে পদে বাধা পেয়েছে ইডি। এ বার বিক্ষুব্ধ জনতার মুখে তাদের পড়তে হয়নি ঠিকই, তবে বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বার বার হোঁচট খেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কারণ, বাড়ির প্রায় সর্বত্র তালা দেওয়া ছিল। কোনও তালার চাবিই পাওয়া যায়নি। তালা ভেঙে চলেছে তল্লাশি। সেই সঙ্গে পাঁচটি ‘অ-মূল্য রতন’ পাওয়া গিয়েছে শাহজাহানের বাড়ি থেকে।
ইডি সূত্রে খবর, শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে বুধবার মোট ১৯টি তালা ভাঙতে হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। দরজা ছাড়াও আলমারি, বিভিন্ন ড্রয়ারের তালা ভাঙা হয়েছে। যদিও খুব বেশি কিছু সেখানে পাওয়া যায়নি।
বুধবার সকাল সকাল সন্দেশখালিতে পৌঁছে গিয়েছিল ইডি। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হয় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান। বাড়িটি তালাবন্ধ ছিল। ইডি চাবির খোঁজ করেছিল, কিন্তু চাবি পাওয়া যায়নি। শাহজাহানের বাড়ির মূল ফটকে দু’টি তালা ভাঙে ইডি। এর পর বাড়িতে ঢুকে একের পর এক আলমারি, ড্রয়ার খোলার চেষ্টা করা হয়। বাড়িতে কোথাও সেই আলমারি বা ড্রয়ারের চাবি পাওয়া যায়নি। ফলে সেই তালাগুলিও এক এক করে ভাঙতে শুরু করেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। মোট ১৯টি তালা ভাঙা হয়েছে।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে আলমারি এবং ড্রয়ারের তালা ভাঙা হয়, তাতে কিছু জামাকাপড় এবং গৃহস্থালির সরঞ্জাম ছাড়া বিশেষ কিছুই ছিল না। ওই বাড়ির এক তলার একটি ঘর থেকে কিছু নথি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ছিল ৫০০ টাকার পুরনো পাঁচটি নোট, যা বর্তমানে অচল। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
শাহজাহানের বাড়িতে ছ’জন ইডি কর্তার সঙ্গে স্থানীয় দু’জনও সাক্ষী হিসাবে ঢুকেছিলেন। ইডির তরফে সাক্ষী ছিলেন তিন জন। এ ছাড়া, এক জন ইডির ভিডিয়োগ্রাফার ছিলেন। দুপুর ২টো পর্যন্ত তাঁরা বাড়ির ভিতরে ছিলেন। তল্লাশি অভিযান শেষ করে তাঁরা বাড়িটি সিল করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ‘নিখোঁজ’ নেতাকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে কলকাতায় হাজিরা দিতে বলে নোটিস সেঁটে দিয়ে এসেছেন বাড়ির দরজায়। আগামী ২৯ তারিখ সকাল ১১টার মধ্যে শাহজাহানকে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে হবে।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। সে দিন ইডি আধিকারিকেরা নেতার বাড়িতে ঢুকতেই পারেননি। উল্টে বাড়ির বাইরে তাঁরা আক্রান্ত হন। নেতার অনুগামীরা ইডি আধিকারিকদের উপরে চড়াও হন এবং তিন জনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বুধবার প্রস্তুত হয়েই সন্দেশখালিতে পা রেখেছিল ইডি। আবার যাতে তাদের বিক্ষুব্ধ জনতার রোষের মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য বুধবার ইডির সঙ্গে ছিল পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী। আদালতে ইডি সন্দেহ প্রকাশ করে, সে দিন শাহাজাহান বাড়িতেই ছিলেন। ভিতর থেকে ফোন করে ইডির বিরুদ্ধে বাইরে লোক জড়ো করেন তিনি। তার পর পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। এখনও তাঁকে ধরা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy