রোজ় ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। ফাইল চিত্র।
তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় অর্ধযুগ আগে। এত দিন পরে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ় ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু এবং তাঁর সংস্থার নামে থাকা বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে সাতটি বিলাসবহুল বিদেশি গাড়িও। তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী ওই গাড়িগুলির দাম প্রায় ২৭ কোটি টাকা।
বিদেশি গাড়ি-সহ বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার যাবতীয় তথ্য সম্প্রতি সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়েছে বলে জানান তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র। এত দিন ওই গাড়িগুলি কোথায় ছিল, এত দিন পরে সেগুলি বাজেয়াপ্তই বা করা হল কেন, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে তদন্তকারী সংস্থা। এত দিন বসে থাকার পরে সেই গাড়িগুলির অবস্থা এখন কেমন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ওই গাড়িগুলি যদি এখনও বিক্রি করা না-হয়, তা হলে কবে হবে, সেই বিষয়ে সব মহলই অন্ধকারে।
আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পরে আদালতের নির্দেশ পেলে তবেই ওই সব গাড়ি নিলামে বিক্রি করা যাবে। তত দিনে কি আর বিদেশি গাড়িগুলির ঠিকঠাক দাম পাওয়া সম্ভব, উঠছে প্রশ্ন। উত্তর অজানা। অভিযোগ, আইনি মারপ্যাঁচেই এই ধরনের বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির যথার্থ মূল্য পাওয়া যায় না। ইডি সূত্রের খবর, ওই সব গাড়ি ছাড়াও রোজ় ভ্যালি এবং গৌতমের নামে থাকা আরও কিছু জমিবাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে গৌতমের তিনটি বিদেশি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তার মূল্য ছিল কয়েক কোটি টাকা। পরবর্তী পর্যায়ে একে একে আরও বিদেশি গাড়ির হদিস পাওয়া যায়। সেই সব গাড়ির নথিপত্র উদ্ধার করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মায়ের অসুস্থতার কারণে গৌতম সম্প্রতি প্যারোলে সাত দিনের অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছেন। সেই জামিনে থাকার সময়েই প্যারোলের সময়সীমা আরও সাত দিন বাড়ানোর জন্য গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী আবেদন করেছিলেন। তবে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে রোজ় ভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। গৌতমকে গ্রেফতার করা হয় ২০১৫ সালে। গত জানুয়ারিতে গৌতমের স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুকেও গ্রেফতার করে সিবিআই। সিবিআইয়ের মামলায় শুভ্রা এখন ভুবনেশ্বরে জেলে রয়েছেন। গৌতম জেলে থাকাকালীন শুভ্রা রোজ় ভ্যালির আমানতকারীদের প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ।
ইডি-র তদন্তকারীদের অভিযোগ, আমানতকারীদের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে রোজ় ভ্যালি। আমানতকারীদের টাকায় নামে-বেনামে বহু সম্পত্তি কেনা হয়েছিল। হাওয়ালা মারফত বিভিন্ন ব্যবসায় বেআইনি ভাবে সেই টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, আর কোথায় কোথায় রোজ় ভ্যালির সম্পত্তি আছে, তার খোঁজ পেতে এখনও নিয়মিত তল্লাশি চলছে। সেই তল্লাশিতেই সাতটি বিলাসবহুল গাড়ির হদিস পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে গৌতমের কয়েকটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সম্প্রতি গৌতমের নিজস্ব আরও কয়েকটি ল্যাপটপের হদিস মিলেছে। ইডি-র দাবি, ওই সব ল্যাপটপে রোজ় ভ্যালির অনেক গোপন তথ্য রয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, "ওই ল্যাপটপগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলি মামলার অন্যতম তথ্যনির্ভর সাক্ষী হতে পারে।’’ তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘আইনি পথে সব অভিযোগেরই মোকাবিলা করা হবে আদালতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy