Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2020

গৃহবন্দি জনতা, সপ্তমী ভিড়হীন

নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানেও দিনভর ফাঁকাই ছিল মণ্ডপ।

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সপ্তমীর সকালে প্রায় ফাঁকা ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো প্রাঙ্গণ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সপ্তমীর সকালে প্রায় ফাঁকা ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো প্রাঙ্গণ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৮
Share: Save:

কে বলবে এ সপ্তমীর বিকেল! মহম্মদ আলি পার্ক থেকে মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত ব্যারিকেড খাঁ-খাঁ করছে। টালার শতবর্ষ পেরনো পুজোয় হাতেগোনা দর্শকেরও দেখা নেই। দক্ষিণ কলকাতার তারকা পুজো মণ্ডপেও কার্যত মাছি তাড়ানোর পরিস্থিতি। শহরের রাজপথে ভিড় সামলানোর ডিউটিতে থাকা অনেক পুলিশকর্মীই উদাস চোখে ফাঁকা ব্যারিকেডের তাকিয়ে ছিলেন। সকালে বা সন্ধ্যায় সামান্য লোকজন জড়ো হয়েছেন বটে। কিন্তু ভিড় মাত্রা ছাড়ায়নি, পথঘাট দেখেও বোঝা যায়নি এই ছবি সপ্তমীর রাতে উৎসব-নগরীর।

শুধু কলকাতা নয়, শহরতলি এবং জেলাতেও ছবি কমবেশি একই। পাড়ায় পাড়ায় ফুচকা কিংবা রোলের দোকানে বিকিকিনি হয়েছে বটে। কিন্তু সেই ভিড়কে ‘পুজোর ভিড়’ বলা চলে না। তবে এ সবের মধ্যেও কিছু মানুষ শুধু পথেই বেরোননি, সুরক্ষাবিধিও উপেক্ষা করেছেন। তাঁদের অনেকেই আবার অন্যদের ‘বকুনি’ শুনেছেন। কলকাতায় মাস্ক না-পরলে পুলিশের জরিমানার মুখেও পড়তে হয়েছে।

একে হাইকোর্টের কড়া নির্দেশিকা, তার উপর মেঘলা আকাশ ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তাই মন সায় না-দিলেও গৃহবন্দি থাকতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।

কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ-সহ গোটা উত্তরবঙ্গেই দুপুরের পর থেকে আকাশ ছিল মেঘলা। কিছু জায়গায় ঝিরঝিরে বৃষ্টিও নামে। মালদহ ছাড়া বাকি তিন জেলায় তেমন ভিড় জমেনি। মালদহে অবশ্য দুপুর থেকেই পায়ে হেঁটে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমান অনেকে। সর্বত্রই পুলিশ তৎপর ছিল।

নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানেও দিনভর ফাঁকাই ছিল মণ্ডপ। বড় পুজোগুলিতেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় দেখা যায়নি। মণ্ডপের ভিতরে পুরোহিত ও পুজো কমিটির কয়েক জন ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। উদ্যোক্তারা অঞ্জলির মন্ত্র শুনিয়েছেন মাইকে। এলাকাবাসী ঘরে বসে অঞ্জলি দিয়েছেন। ভার্চুয়াল অঞ্জলিও হয়েছে। হুগলি ও হাওড়ার পুজো মণ্ডপ এবং রাস্তাঘাট ষষ্ঠীর চেয়েও ফাঁকা ছিল। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ শহরে ব্যারিকেডের বাইরেও ভিড় ছিল না।

মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের বড় পুজোগুলিতেও হাতেগোনা দর্শনার্থী এসেছেন। তুলনায় কিছুটা ভিড় ছিল বেলদা, কেশিয়াড়ি, দাঁতনে। বিকেলের পর অনেকেই মণ্ডপমুখী হন। ঝাড়গ্রামেও নিয়ম মেনেই ব্যারিকেডের বাইরে থেকেই প্রতিমা দর্শন করেন অনেকে।

আরও পড়ুন: মণ্ডপ ঘুরেই রেস্তরাঁর লাইনে! বিপদ কাটবে তো?

পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, দিঘা, কাঁথির অধিকাংশ ছোট-বড় পুজো ছিল প্রায় ফাঁকা ছিল। নোনাকুড়ি সাংস্কৃতিক সংস্থা পুজো কমিটির সম্পাদক জয়দেব বর্মনের কথায়, ‘‘দর্শনার্থীর সংখ্যা এতই কম যে ভিড় সামলানোর প্রশ্নই ওঠেনি।’’ মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার কে শবরী রাজকুমারেরও বক্তব্য, “সব পুজো উদ্যোক্তাই নিজেদের কর্তব্য পালন করেছেন। বৃষ্টিও করোনা বিধি কার্যকর করতে সাহায্য করেছে।’’

তবে বীরভূমে ‘নো এন্ট্রি’ জ়োনের বাইরে ভিড় সর্বত্র নিয়ন্ত্রিত ছিল না। সপ্তমীর সকালে শোভাযাত্রা সহকারে নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে আনার সময়ও ভিড় জমেছে। অনেকেরই মুখে মাস্ক ছিল না। রামপুহাট, সিউড়ি বোলপুর ও দুবরাজপুর—সর্বত্রই এক ছবি। ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে হেলমেট না পরা-সহ পথ নিরাপত্তার আইন লঙ্ঘন করায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল জেলায় প্রায় ১০০টি মোটরবাইক আটক করা হয়েছে বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ জানিয়েছে।

আলিপুর হাওয়া অফিস অবশ্য জানিয়েছে, নিম্নচাপ বাংলাদেশে পাড়ি দিয়েছে। আজ, অষ্টমী থেকেই আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিহীন অষ্টমী কি জনতাকে পথে নামাবে, নাকি সচেতনতার ছবি বজায় থাকবে রাজ্যে?

আপাতত এটাই বড় প্রশ্ন।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy