Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চিকিৎসক-ঘাটতি, তবু অনড় রাজ্য

১০৫ জন সরকারি চিকিৎসককে উচ্চশিক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে গত ছ’দিন ধরে ওয়েলিংটনে অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন কয়েকশো সরকারি চিকিৎসক।

চিকিৎসকদের অবস্থান-বিক্ষোভ। মঙ্গলবার, ওয়েলিংটনে। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসকদের অবস্থান-বিক্ষোভ। মঙ্গলবার, ওয়েলিংটনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৯
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ঘাটতি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) এবং কলকাতা হাইকোর্ট স্বাস্থ্য দফতরকে সরকারি চিকিৎসকদের উচ্চশিক্ষায় অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে নড়েনি স্বাস্থ্য দফতর। এখনও ১০৫ জন সরকারি চিকিৎসককে উচ্চশিক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে গত ছ’দিন ধরে ওয়েলিংটনে অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন কয়েকশো সরকারি চিকিৎসক। আদালতের নির্দেশ অমান্য করা নিয়ে মামলাও দায়ের করেছেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর সরকারি চিকিৎসকদের ৩৬৪ জন স্নাতকোত্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ২৫৯ জনকে উচ্চশিক্ষার অনুমতি দিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্যকর্তাদের যুক্তি, সব চিকিৎসককে পড়ার অনুমতি দিলে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। গ্রামের স্বাস্থ্য পরিষেবা বজায় রাখতেই অধিকাংশকে উচ্চশিক্ষার অনুমতি দেওয়া হলেও সবাইকে দেওয়া যায়নি।

চিকিৎসকেরা অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। স্বাস্থ্য ভবনের একটি অংশই জানাচ্ছে, এ রাজ্যে এমবিবিএস পাশ করে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে যোগ দেওয়া চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। কিন্তু গ্রামে বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসক আছেন মাত্র ১১৭ জন! ব্লক বা মহকুমা স্তরে বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকের আসন সংখ্যা ১৭৪৫। ফলে হিসেব মতো ঘাটতি রয়েছে ১৬২৮ জনের। অথচ তার পরেও চিকিৎসকদের উচ্চশিক্ষায় আপত্তি সরকারের।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সংগঠন, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সাত হাজার চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও ১০৫ জনকে উচ্চশিক্ষার অনুমতি দিলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অচল হয়ে যাবে। অথচ মাত্র ১১৭ জন বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসক নিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা বজায় থাকবে। এটা কি বাস্তবসম্মত যুক্তি? ব্লক কিংবা মহকুমা স্তরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে রাখতেই কি এই সিদ্ধান্ত?’’

আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা জানান, আদালতের নির্দেশ যে অমান্য করা হচ্ছে, তাঁরা ইতিমধ্যেই স্যাটের কাছে সে বিষয়ে জানিয়েছেন। আজ, বুধবার ওই মামলার শুনানিতে স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এর পরে চিকিৎসকেরা ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। কী ভাবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হচ্ছে, সে বিষয়টি বিচারকের সামনে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি, এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দিয়েছেন অবস্থানকারীরা। প্রয়োজনে তাঁরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও যাবেন বলে জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য চিকিৎসকদের অবস্থান-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গিয়েছে। আইনমাফিক সব সিদ্ধান্ত হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Health Department Doctors SAT Kolkata High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE