মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ১২ ঘণ্টার জন্য প্রতীকী অনশনে বসেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। — নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান, রায়গঞ্জস বাঁকুড়া থেকে কোচবিহার, শিলিগুড়ি— মঙ্গলবার জেলায় জেলায় প্রতীকী অনশনে বসেছেন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরাও। ধর্মতলায় শনিবার রাত থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন সাত জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের সংহতি জানিয়ে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজে এই প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। পাশাপাশি, নির্যাতিতা চিকিৎসকের জন্য বিচার, রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা-সহ ১০ দফা দাবিও তুলে ধরেছেন তাঁরা। অনশনের মঞ্চে বসে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, সিবিআই যে চার্জশিট সোমবার আদালতে পেশ করেছে, তাতে তাঁরা খুশি নন। তবে আদালতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
পূর্ব ঘোষণা মতো মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ১২ ঘণ্টার জন্য প্রতীকী অনশনে বসেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। জরুরি বিভাগের কাছে এই প্রতীকী অনশন শুরু হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে গৌরাঙ্গ প্রামাণিক এবং রিজওয়ান জানিয়েছেন, ধর্মতলায় যে অনশন চলছে, তার প্রতি সংহতি জানাতেই তাঁদের এই প্রতীকী অনশন। একই সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডের দোষীদের শাস্তি চান তারা। তাঁদের কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের চার্জশিটে আমরা খুশি নই৷ এই ঘটনা কখনওই এক জনের কাজ হতে পারে না। তবে আদালতের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ আন্দোলনকারীরা আরও জানিয়েছেন, চিকিৎসা পরিষেবা পুরোপুরি সচল রেখেই এই অনশন করছেন তাঁরা। সিনিয়র ডাক্তারেরাও তাঁদের পাশে রয়েছেন।
কোচবিহারে এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও প্রতীকী অনশন করছেন জুনিয়র এবং সিনিয়র ডাক্তারেরা। হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে নির্যাতিতার বিচারের দাবি তুলেছেন তাঁরা। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মেনে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজেও ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সঙ্গে শামিল হয়েছেন সিনিয়র ডাক্তারেরাও। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের সামনে চলছে ধর্না। আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতার জন্য বিচার চাওয়ার পাশাপাশি, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে নিগ্রহের অভিযোগের ঘটনাতেও দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা। সোমবার রাতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে রোগীর পরিবারের হাতে চিকিৎসক, নার্সদের নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের মঙ্গলবার রায়গঞ্জ জেলা আদালতে হাজির করানো হচ্ছে।
শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনে যোগ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ এবং প্রাক্তন পড়ুয়াদের একাংশ। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেখানে প্রতীকী অনশনে বসেন অধ্যাপক তথা চিকিৎসক দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্পন্দন ভাদুড়ি, মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন চিকিৎসক-পড়ুয়া সঙ্গীতা জেনা, হেডক্লার্ক উৎপল সরকার। যোগ দিয়েছেন কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তারও। দীপাঞ্জন ২৪ ঘন্টা এবং বাকি চার জন ১২ ঘন্টার প্রতীকী অনশনে বসেছেন। দীপাঞ্জন বলেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে তাঁদের পাশে থাকা আমাদের কর্তব্য। এই কারণে আমরা প্রতীকী অনশনে যোগ দিলাম। সরকার দ্রুত তাদের দাবি পূরণ করুক, এটাই চাইব।’’ প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই জুনিয়র ডাক্তার সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাঁরা হলেন, অলোক কুমার বর্মা এবং শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মতলার মঞ্চ থেকে সে কথা ঘোষণা করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার প্রতীকী অনশন করেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতালের মূল ভবনের পাশেই অবস্থান মঞ্চে মোট ১৬ জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করেন। অনশন মঞ্চে উপস্থিত থেকে অনশনকারীদের উৎসাহ দেন হাসপাতালের অন্যান্য জুনিয়র ডাক্তারেরাও।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আরজি কর হাসপাতালে প্রতীকী অনশনে বসেছেন সেখানকার সাত জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের প্রতিনিধি হিসাবে সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেন আরজি করের মেডিক্যাল অফিসার তাপস প্রামাণিক। তাপস ছাড়াও বাকি যে ছয় চিকিৎসক প্রতীকী অনশনে বসেছেন তাঁরা হলেন নীলাকাশ মণ্ডল, পারমিতা থান্ডের, প্রবুদ্ধ দত্ত, শুভদীপ বিশ্বাস, তুহিন হাজরা এবং অনুপম রায়। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারেরা পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজ্য মেডিক্যাল কলেজের ‘অনিয়ম’ নিয়ে সরব হন। কাউন্সিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়কেও কটাক্ষ করেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা বলেন, “যাঁদের নিজেদের এথিক্স নেই, তাঁরা ডাক্তারদের এথিক্স শেখাচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy