Advertisement
E-Paper

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ৩২০০০ চাকরি বাতিলের রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ

গত শুক্রবার ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে রায় সংশোধন করে সংখ্যাটি ৩২ হাজারের কাছাকাছি বলে জানান। সেই রায়েই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ।

Division bench of Calcutta High Court stayed the order of job termination of primary teachers in Recruitment Scam

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ১৩:১৫
Share
Save

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অথবা আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় গত শুক্রবার এই মামলার রায় দিতে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ তার অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই চলতে হবে।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা আপাতত ৪ মাস তাঁদের স্কুলে যেতে পারবেন। তবে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতনকাঠামো অনুসরণ করে তাঁদের বেতন দেওয়া হবে। ডিভিশনের বেঞ্চের অন্তর্বর্তী নির্দেশের পর তাঁরা আবার আগের মতো বেতন পাবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, আগের বেতনকাঠামো অনুসারেই বেতন পাবেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সকলেই অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ের ফলে চাকরি বাতিল না হলেও, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই ৩২ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষককে। শুক্রবার হাই কোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে অগস্ট মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে। সেপ্টেম্বরে মামলাটি আবার শুনবে ডিভিশন বেঞ্চ।

২০১৬ সালে প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছিল মোট ৪২,৫০০। এর মধ্যে প্রশিক্ষিত (শিক্ষণের ডিগ্রি বা ডিএলএড থাকা) ৬৫০০ জনকে নিয়ে বরাবরই কোনও বিতর্ক নেই। গত শুক্রবার বাকি ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করা হয়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, নতুন করে ইন্টারভিউ পাশ করলে তাঁরা চাকরি ফিরে পাবেন। না হলে চাকরি খোয়াতে হবে। তার পরেই সোমবার মামলাকারীদের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের আসল সংখ্যা ৩০ হাজার ১৮৫। ৩৬ হাজার নয়। লেখায় ভুল (টাইপোগ্রাফিক্যাল এরর) হয়েছে!

প্রিয়ঙ্কা নস্কর-সহ ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী ২০১৬ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আদালতে জানান, এই মামলাকারীদের থেকে কম নম্বর পেয়ে প্রশিক্ষণহীন অনেকেই চাকরি পেয়েছিলেন। এই মামলাতেই উঠে আসে ইন্টারভিউ বিতর্ক। অভিযোগ ওঠে, নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়ার কথা থাকলেও বহু ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন জেলায় যাঁরা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন, তাঁদের তলব করে গোপন জবানবন্দিও নথিবদ্ধ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তার ভিত্তিতেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন তিনি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সোমবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলা করা হয়। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির শুরুতেই বিচারপতি তালুকদার বলেন, ‘‘একক বেঞ্চ তো আবার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। কাউকে তো নেকড়ের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়নি। তা হলে সমস্যা কোথায়?’’

চাকরিহারাদের পক্ষে তাঁদের আইনজীবীরা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে সওয়াল করে জানান, আদালতের নির্দেশেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। তাদের কোনও তদন্তের রিপোর্টে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও তথ্য উঠে আসেনি, যার জন্য ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিতে হবে। যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ দেয়নি আদালত। তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই চাকরি বাতিলের এত বড় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের তরফে এই যুক্তিও দেওয়া হয় যে, পর্ষদের সেই সময়কার বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে, নিয়োগের ২ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ নিতে হবে প্রার্থীদের। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ীই অপ্রশিক্ষিত হিসাবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা। ফলে এ ক্ষেত্রে আইন ভেঙে কোনও নিয়োগ হয়নি বলে দাবি চাকরিচ্যুতদের একাংশের।

ডিভিশন বেঞ্চে চাকরি বাতিলের বিপক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়েরর পুরনো একটি মন্তব্যকেও তুলে ধরা হয় চাকরিহারাদের তরফে। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন গত ৬ ডিসেম্বর বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।’’ চাকরিচ্যুতদের দাবি, সেই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার, চাকরি বাতিল করা আগে থেকেই স্থির ছিল।

Calcutta High Court Teachers Recruitment Scam Justice Abhijit Gangopadhyay Division Bench WBBPE Primary teachers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।