থমকে: মেট্রোর কাজের জন্য চিংড়িঘাটা মোড়ের কাছে যানজট। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছরের অপেক্ষার অবসান। পুলিশের অনুমতি মেলার পরে বৃহস্পতিবার চিংড়িঘাটা মোড়ে শুরু হল মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণের কাজ। রাত আটটা নাগাদ মাটি খোঁড়ার মাধ্যমে এই কাজের সূচনা হয়। মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা ‘রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড’ (আরভিএনএল) সূত্রের খবর, চিংড়িঘাটা মোড়ে রাস্তার উপরে তৈরি হবে ৩১৮ নম্বর স্তম্ভ। তার সঙ্গেই ওই রাস্তার পাশে সল্টলেকের দিকে খালের কাছাকাছি তৈরি হবে ৩১৯ নম্বর স্তম্ভ। তবে, এর জন্য গাড়ির চাপের কথা মাথায় রেখে পুলিশের তরফে যান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চিংড়িঘাটা মোড়ের নির্মীয়মাণ ৩১৮ নম্বর স্তম্ভটি ঘিরেই এত দিন ধরে জটিলতা চলেছে। যানজটের কথা ভেবে এত দিন মেট্রো কর্তৃপক্ষকে কাজ শুরুর অনুমতি দেয়নি পুলিশ। সম্প্রতি এ নিয়ে পুলিশের তরফে চিংড়িঘাটার ওই এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত হয়। গত শনি থেকে মঙ্গলবার যান নিয়ন্ত্রণ করলেও বিকেল পাঁচটা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়িচালকদের খুবই সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ। বুধবার চিংড়িঘাটার সংশ্লিষ্ট জায়গাটি পরিদর্শনে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল। তিনি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে স্তম্ভ তৈরির মৌখিক অনুমতি দেন। এর পরেই আরভিএনএল-এর কর্মীরা ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেন। তবে এ দিন কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ির জট তৈরি হয়।
ওই এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘সেক্টর ফাইভ থেকে যে রাস্তাটি চিংড়িঘাটা মোড়ের দিকে আসছে, সব চেয়ে বেশি চাপ হচ্ছে ওই অংশে। গাড়ির লাইন নিকো পার্ক এবং লোহাপুলের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে যাচ্ছে।’’ চিংড়িঘাটায় কর্তব্যরত বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যান নিয়ন্ত্রণের আগে সেক্টর ফাইভ থেকে চিংড়িঘাটা মোড়ের দিকে আসা গাড়িগুলিকে বাঁ দিকের দু’টি লেন দিয়ে ইএম বাইপাসে তুলে দিতেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। কিন্তু যান নিয়ন্ত্রণ করে কলকাতা পুলিশ জানিয়ে দেয়, সিগন্যাল সবুজ হওয়া পর্যন্ত ওই ভাবে গাড়ি ছাড়া যাবে না। এতেই গাড়ির লাইন বেড়ে যেতে থাকে।’’
এই পরিস্থিতিতে বুধবার ফের বৈঠকে বসেন পুলিশকর্তারা। নতুন এই নিয়ম কার্যকর করা যাবে না জানিয়ে প্রস্তাব ওঠে, সিগন্যালের অপেক্ষা না করে সেক্টর ফাইভের দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে একেবারে বাঁ দিকের একটি লেন দিয়ে বাইপাসে তোলা হোক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের উপস্থিতিতে। বিকেল পাঁচটা থেকে রাত ন’টা, এই ব্যবস্থা চলুক। এর পরেই তড়িঘড়ি চিংড়িঘাটা মোড়ের কাছে রাস্তায় দিক-নির্দেশ আঁকা হয়। এ দিন থেকে ওই রাস্তায় সেই ভাবেই গাড়ি চলছে। পাশাপাশি, চিংড়িঘাটা মোড়ের কাছে সেক্টর ফাইভের দিক থেকে আসার অংশের ফুটপাত ভাঙা হয়েছে। জায়গাটি আরও চওড়া হওয়ায় ওই অংশ দিয়ে পথচারীদের যাতায়াত করতে সুবিধা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সেই সঙ্গে ক্যানাল সাউথ রোড এবং চাউলপট্টি রোডকে একমুখী হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্যানাল সাউথ রোড দিয়ে ট্যাংরার দিকে গাড়ি বার করা হচ্ছে। চাউলপট্টি রোড দিয়ে গাড়ি আসছে ইএম বাইপাসের দিকে। সূত্রের খবর, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে মেট্রোর স্তম্ভ তৈরির কাজ শেষ করা হবে জানিয়ে পুলিশের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘এর বেশি সময় লাগলেও কিছু করার নেই। গাড়িচালকদের যতটা সম্ভব সুরাহা দিয়ে কাজটা করতে দিতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy