সঙ্গীতা সরকার। নিজস্ব চিত্র
বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি জেহাদ ঘোষণা করেছিল মেয়েটি। সে দিনের সেই ‘অবাধ্য’ মেয়ের লড়াইকেই এ বার ‘রোল মডেল’ হিসেবে তুলে ধরতে চায় উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন!
দু’বছর আগের ঘটনা। গোয়ালপোখরের সঙ্গীতা সরকার মাধ্যমিক পাশ করার পর তার বিয়ের ঠিক করেছিলেন বাবা-মা। কিন্ত সে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, সে পড়তে চায়। সেখানেই থামেনি সে। পড়াশোনা করতে চেয়ে স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বাড়ির পরিস্থিতির কথা জানায়। প্রধান শিক্ষক-সহ অন্য শিক্ষকরা বাবা-মাকে বুঝিয়ে সঙ্গীতার বিয়ের পরিকল্পনা বাতিল করে। সেই সঙ্গীতাই এ বার গোয়ালপোখর-২ নম্বর ব্লকে উচ্চ মাধ্যমিকে সেরা। ৪৬৭ নম্বর পেয়েছে চাকুলিয়ার রামকৃষ্ণপুর পিডিজিএম হাইস্কুলের ছাত্রী সঙ্গীতা। ভূগোল নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে চায় সে। ভবিষ্যতে ইচ্ছে শিক্ষিকা হওয়ার। সেই স্বপ্নে এখন প্রধান বাধা সংসারের আর্থিক অনটন। বাবা পঙ্কজ সরকার গ্রামের হাটে ফল বিক্রি করেন। মা একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে কাজ করেন। সঙ্গীতার দাদা কলেজেই পড়া বন্ধ করে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন। বোন দশম শ্রেণি। পাঁচ জনের সংসারে এত অল্প আয়ে কী ভাবে আগামী দিনে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগে সঙ্গীতা। তার চেয়েও বড় চিন্তা, আবার যদি বাড়ি থেকে তার বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়! ভয়টা পাচ্ছেন তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম সাহাও। শনিবার তিনি জানালেন, স্কুল যতটা সম্ভব সঙ্গীতার পাশে থাকবে।
আর মেয়ের সাফল্যে খুশি সঙ্গীতার বাবাও। বললেন, ‘‘মেয়ের কাছে হেরেছি! লজ্জা নেই এতে।’’ তিনি এখন চান, মেয়ে পড়াশোনা করুক। কিন্তু কী করে এর পর মেয়েকে পড়াবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তিনি। এ দিকে, নাবালিকা হিসেবে নিজের বিয়ে আটকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সঙ্গীতার এই লড়াইকে রোল মডেল করে প্রচারের ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy