তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক। — ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তের গতি নিয়ে আবারও সিবিআইকে ধমক দিল আদালত। বৃহস্পতিবার আলিপুরের জেলা দেওয়ানি এবং দায়রা আদালতে ছিল নিয়োগ দুর্নীতির মামলা। সেখানেই সিবিআইকে একহাত নিয়ে বিচারক জানিয়েছেন, সিবিআই এতটাই ‘স্বচ্ছ’ তদন্ত করছে যে, কিছুই দেখা যায় না। সিবিআইয়ের সাধ্যের মধ্যে নেই বলেও কটাক্ষ করেছে আদালত। তদন্তকারী সংস্থার যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক।
সিবিআইয়ের আইনজীবী বৃহস্পতিবার আদালতে জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। বিচারক এই নিয়ে জবাবদিহি চেয়েছেন। আদালতে এই নিয়ে ঠিক কী কথাবার্তা হয়েছে, তার নির্বাচিত অংশ কথোপকথনের আকারে তুলে ধরা হল।
পাবলিক প্রসিকিউটর (সরকারি আইনজীবী): এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। যে টাকা (বেআইনি নিয়োগের জন্য) তোলা হয়েছে বাজার থেকে, তা উপর পর্যন্ত গিয়েছে। পয়সা বাজারে কোথা থেকে এসেছিল? মানি ট্রেল। সবার একটাই লক্ষ্য ছিল। কে পয়সা সংগ্রহ করবে, কত দূর যাবে, সব ঠিক করা ছিল। এর শিকড় কতদূর বিস্তৃত।
বিচারক: কত দিন চলবে এ সব? আপনাকে হাই কোর্ট একটা তদন্ত করতে বলেছে। আপনি শুধু বলে চলেছেন, চলছে, চলছে। কত দিন, জানেন না।
নীলাদ্রি এবং এসপি সিনহার আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত: চার্জশিটের কগনিজেন্স (আইনগত ভাবে গৃহীত হয়নি) নেওয়া হয়নি।
বিচারক: এখনও পর্যন্ত চার্জশিটের কগনিজেন্স নেওয়া গেল না। কী আইনজীবীর কথা বলছেন? সিবিআই আসলে ‘সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনকম্পিটেন্সি’। (সিবিআইয়ের প্রকৃত অর্থ সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।
পাবলিক প্রসিকিউটর: দু’টি চার্জশিটে কী কী অগ্রগতি, সব লেখা রয়েছে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী: আজ নীলাদ্রি দাসের বিষয়ে বালাজি নিয়ে বলা হচ্ছে। বালাজি ছবিতে এল কী করে? (নীলাদ্রি ওএমআর শিট প্রস্তুতকারী সংস্থার আধিকারিক। দিন কয়েক আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার তিনি।)
বিচারক: আপনারা এখনও বালাজিকে আটক করেননি কেন? এক বছর লেগে গেল বুঝতে যে কাকে চাই, আর কাকে চাই না? হাই কোর্টকে বলে দিন, আপকি বস কি বাত নেহি। আদালত আপনার তদন্তের অভিভাবক নয়।
সিবিআই আইনজীবী: আমরা যাঁদেরই ধরেছি, উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়ার পরই ধরেছি। স্বচ্ছ তদন্ত।
বিচারক: আপনাদের তদন্ত এতই স্বচ্ছ, যে কিছু দেখা যাচ্ছে না।
সিবিআই আইনজীবী: যখন আমাদের কাছে প্রমাণ এল যে, নীলাদ্রি প্রমাণ নষ্ট করছে, তখন তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন আমরা প্রমাণ নিয়ে আসি। আজও নিয়ে এসেছি। আমরা যেখানে তল্লাশি চালাচ্ছি, কিছু না কিছু পাচ্ছি। আদালতের সামনে এনেছি। মানি ট্রেলিংয়ে কোথায় কোথা টাকা যাচ্ছে, দেখা হচ্ছে। টাকা কোথা থেকে কোথায় গেল, কোথায় ওই টাকা ব্যবহার হল সব দেখা হচ্ছে। কারও জামিন হলে তদন্ত প্রভাবিত হবে।
বিচারক: এই রেকর্ড কত দিন বাজবে? কত দিন? আপনাদেরও একটা সময়সীমা রয়েছে। কোথাও গিয়ে সব গোটাতে হবে। বৃহত্তর না হয়ে বৃহত্তম কাণ্ড হলেও আর কত দিন?
শান্তিপ্রসাদ সিনহার আইনজীবী: ১৪০ কোটি নাগরিকের কোভিড টিকাও সময় মতো হয়ে গেল।
সিবিআইয়ের আইনজীবী: এই দুর্নীতিতে অনেকে জড়িত। মিডল ম্যান, এজেন্ট।
বিচারক যদিও এ সব দাবি শুনতে চাননি। তিনি বার বার সময়সীমায় কাজ শেষ করার কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন। এর আগে হাই কোর্টই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিবিআইকে একহাত নিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy