—প্রতীকী ছবি।
অ-বিজেপি দলগুলির দ্বিতীয় মহা-বৈঠক বেঙ্গালুরুতে শুরু হওয়ার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনার বিরুদ্ধে আপত্তির সুর আরও জোরালো হল কংগ্রেসে। বাংলার কংগ্রেস গোড়া থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার বিরোধিতা করে আসছে। এ বার উত্তর-পূর্বের কয়েকটি রাজ্য নেতৃত্বের তরফেও একই সুর শোনা গেল।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি উপলক্ষে উত্তর-পূর্বের কয়েকটি রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বকে দিল্লিতে বৈঠকে ডেকেছিল এআইসিসি। সূত্রের খবর, অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরার মতো রাজ্যের নেতারা এআইসিসি-র কাছে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা না করার পক্ষেই মত দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, ত্রিপুরা বা মেঘালয়ে কংগ্রেস ভাঙিয়েই সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হয়নি। বরং, তাতে ভোটে লাভ হয়েছে বিজেপিরই। যাদের কাজকর্মে বিজেপি সহায়তা পায়, তাদের হাত ধরে এগোনোর চেয়ে প্রয়োজনে একা লড়াই করা ভাল বলেও ওই নেতাদের মত। বৈঠকে ছিলেন মেঘালয়ের কংগ্রেস নেতা ভিনসেন্ট পালা, ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস সাহা, সুদীপ রায় বর্মণ, বর্ষীয়ান নেতা গোপাল রায় প্রমুখ। সুদীপ রবিবারও বলেছেন, ‘‘তৃণমূল একটা আঞ্চলিক দল। পশ্চিমবঙ্গে তারা শক্তিশালী। কিন্তু উত্তর-পূর্বে তাদের কোনও অস্তিত্ব নেই।’’
মেঘালয়ে কংগ্রেস তাদের লোকসভায় আসন ছাড়লে বাংলায় তারা কংগ্রেসকে জায়গা দেওয়ার কথা ভেবে দেখতে পারে, এমন একটি প্রস্তাবের কথা ভাসানো হয়েছে তৃণমূলের একাংশের তরফে। সেই প্রেক্ষিতেই উত্তর-পূর্বের কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূল-বিরোধী মত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পটনায় বিরোধীদের আগের বৈঠক এবং বেঙ্গালুরুতে এ বারের বৈঠকের মাঝে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। যেখানে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস ও জালিয়াতি’ করে ‘গণতন্ত্রকে হত্যা’র অভিযোগ তুলেছে বিরোধী সব দল। তার মধ্যে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেস এবং সিপিএমও আছে। কংগ্রেস কর্মীরা যখন তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত ও নিহত হচ্ছেন, তখন সেই দলের সঙ্গে জাতীয় স্তরের বৈঠকে দলের কর্মীদের কাছে ‘ভুল বার্তা’ যাবে বলে বাংলার কংগ্রেস নেতারা সরব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কড়া তৃণমূল-বিরোধী অবস্থান নিয়ে চলেছেন। রাজ্যের একাধিক কংগ্রেস নেতা-কর্মী সমাজমাধ্যমে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাহুল গান্ধীদের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সমঝোতা না করার। পঞ্চায়েতে হিংসা এবং কংগ্রেস কর্মীদের আক্রান্ত হওয়া প্রসঙ্গে সুদীপেরও দাবি, ‘‘ত্রিপুরায় বিজেপি যা করেছে, বাংলায় তৃণমূল একই কাজ করছে। তাই বিজেপি রাস্তায় নেমে বেশি প্রতিবাদ করতে পারছে না।’’
বিজেপি-বিরোধী দলগুলির নিজেদের মধ্যের সমস্যা নিয়ে বেঙ্গালুরুর বৈঠকে আলোচনা শুরু হতে পারে। সূত্রের খবর, বাংলার প্রসঙ্গ সেখানে এলে বিজেপির সঙ্গে একযোগে কংগ্রেস, সিপিএম অশান্তি করেছে বলে সরব হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রস্তুত থাকছে সিপিএমও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy