গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবু ধাবি থেকে বিমানটি এসেছিল হায়দরাবাদে। প্রোটোকল মেনে এমিরেটসের ওই বিমানে আসা যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ করে তেলঙ্গানার স্বাস্থ্য দফতর। আর সেই পরীক্ষার রিপোর্টেই জানা গেল, বাংলার এক বালক ওমিক্রন আক্রান্ত। তার বাড়ি এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদে। বুধবার সকালে ওই বালকের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পায় তেলঙ্গানার স্বাস্থ্য দফতর। সে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য দফতরের ডিরেক্টর শ্রীনিবাস রাও আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘রিপোর্ট পেয়ে আগে বাংলার সরকারকে সতর্ক করেছি আমি।’’
শ্রীনিবাসনের সতর্কবার্তা পেয়েই নড়েচড়ে বসে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। দ্রুত ওই বালকের সন্ধান শুরু হয়। দুপুরের মধ্যেই জানা যায়, তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার বেনিয়াগ্রামে। বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীনিবাস বলেন, ‘‘ওই বালকের পরিবার আবু ধাবি থেকে এসেছিল। প্রোটোকল মেনেই আবু ধাবি থেকে আসা এমিরেটসের ওই বিমানের যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে তা পাঠানো হয় সেন্টার ফর ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট অ্যান্ড ডায়গোনস্টিক (সিডিএফডি)-এ। আজ সকালেই রিপোর্ট এসেছে। সেই রিপোর্ট থেকেই জানা যায় ওই বালক ওমিক্রন আক্রান্ত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা জানতে পারি, ওই বালকের পরিবার পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা। আমি সঙ্গে সঙ্গে বাংলার সরকারকে জানাই। ওদের সতর্ক করি।’’
হায়দরাবাদ থেকে সতর্কবার্তা পেয়ে নড়েচড়ে বসে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। খোঁজখবর নিয়ে স্বাস্থ্যভবন জানতে পারে, ওই বালকের পরিবার বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে সোজা মুর্শিদাবাদে গিয়েছে। এর পর যোগাযোগ করা হয় মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বুধবার দুপুরে বলেন, ‘‘আবু ধাবি থেকে বিমানে হায়দরাবাদ আসে ওই বালকের পরিবার। তার পর কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সড়ক পথে ফরাক্কা থানার বেনিয়াগ্রামে এসে পৌঁছয়। যদিও এই মুহূর্তে আক্রান্ত বালক মালদহ জেলার কালিয়াচক থানা এলাকায় রয়েছে। সেখানে তার মামাবাড়ি। তার খোঁজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।’’ বেনিয়াগ্রামকে ইতিমধ্যেই গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কন্টেনমেন্ট জোন) ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিকেল গড়ানোর আগেই ওমিক্রনে আক্রান্ত ওই বালকের মামাবাড়িতে মেডিক্যাল টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পাপড়ি নায়েক জানিয়েছেন, ওই পরিবারের প্রত্যেকের তো বটেই, যাঁরা তাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদেরও কোভিড পরীক্ষা করা হবে। সেই রিপোর্ট দেখেই নেওয়া হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আপাতত ওই পরিবারের প্রত্যেককে নিভৃতবাসে রাখা হচ্ছে। পাপড়ি বলেন, ‘‘সুরক্ষার কারণেই ওই বালক এবং তার মা-কে আমরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজের কোভিড ওয়ার্ডে নিয়ে এসে নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করছি। নিয়ম মেনেই ওঁদের ফের পরীক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ কালিয়াচকের ওই গ্রামের সকলকে সচেতন করতে স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
কলকাতা পুরভোটের প্রচারে বেরিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বুধবার ওমিক্রন প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘ওমিক্রন নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এতে প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে খুবই সংক্রমক। তাই একটু খেয়াল রাখতে হবে। আমরা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া সামলানোর চেষ্টা করেছি। কোভিড সামলেছি। চিন্তা করবেন না। এটাও সামলে নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy