গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘রঙ্গ-ব্যঙ্গ’ চলছেই। এ বার রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘গরুর দুধে সোনা’ বক্তব্যকে পুরোদস্তুর প্রচারের হাতিয়ার করে ফেলল তৃণমূল।
শুক্রবার সকাল ১০টা। শ্রীরামপুর স্টেশনের সামনের চত্বর হঠাৎই ‘হাম্বা’ রবে মুখরিত। হাত-মাইকে খদ্দের ডাকছেন তৃণমূল নেতা। ৩০ হাজার টাকায় মিলবে এক লিটার দুধ!
ব্যাপারটা কী?
ভিড়ের মাঝে দেখা গেল, চার-চারটে গরু আর হাতে পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। পোস্টারে লেখা, ‘আমরা শিক্ষিত। কিন্তু বেকার। আমাদের অর্থের প্রয়োজন। দিলীপবাবু বলেছেন, গরুর দুধে সোনা আছে। তাই আমরা বেকার ছেলেরা সবাই মিলে দুধ বিক্রি করব।’ রাস্তায় দাঁড়িয়েই গরুর দুধ দোয়ানো হল। ঘণ্টা দেড়েক ধরে চলল ওই ‘ব্যবসা’।
কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন শ্রীরামপুর শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা পুর-কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘দেশে চাকরি নেই। উল্টে কেন্দ্রীয় সরকার লোক ছাঁটাই করছে। অর্থনীতি ধুঁকছে। দিলীপবাবু এই সমস্যা সমাধানের উপায় বাৎলেছেন। ওঁর কথা অনুযায়ী, গরুর দুধে যে হেতু সোনা আছে, তাই আমরা এই কর্মসূচি নিয়েছি। সোনার দর ৩৮ হাজার টাকা ভরি। দুধের দাম সেই হিসাবে কমই রেখেছিলাম। কিন্তু একটাও খদ্দের পেলাম না।’’
বুধবার চণ্ডীতলার গরলগাছার বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল একটি গরু নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতে হাজির হয়েছিলেন। বলেন, গরুটি রেখে যেন ঋণ দেওয়া হয়। পঞ্চায়েতের লোকজন তাঁকে অন্যত্র যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তিনি গরুটিকে নিয়ে ডানকুনির কালীপুরে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেয়, এমন একটি সংস্থায় যান। সেখানেও তিনি একই আর্জি জানান। বলেন, দিলীপবাবু বলেছেন, গরুর দুধে সোনা আছে। তাই দুধেল গরুর বিনিময়ে ঋণ নিতে এসেছেন। এই ঘটনাটি নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসিঠাট্টা শুরু হয়েছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, এর পিছনেও রয়েছে তৃণমূলের একাংশ। এতে সাফল্য পেয়েই তৃণমূল এই ধরনের প্রচারের ধার বাড়াচ্ছে।
রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই অবশ্য এই বিষয় ‘চটুল’ বলেই মনে করছেন। তবে সন্তোষবাবুর সুরেই প্রশান্ত বলছেন, ‘‘গরুর দুধে সোনা যখন আছে, তখন তাকে কাজে লাগানো হোক। সোনার বিনিময়ে ঋণ দেওয়া গেলে গরুর বদলেও দেওয়া উচিত। আমার ২০টা গরু আছে। ঋণ পেলে ব্যবসা বাড়াব।’’ প্রশান্তবাবু তৃণমূলের সমর্থক। ওই দলের নেতা তথা গরলগাছা পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংহ বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের কথায় মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাই এমন হচ্ছে।’’
তৃণমূলের বক্তব্যের পাল্টা বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, ‘‘কোনও খাবারের মধ্যে লোহা থাকলে, তা দিয়ে কি তৃণমূলের লোকেরা বাড়ির জিনিস বানান? আসলে, সদর্থক কোনও বিষয় না থাকায় ওঁরা মুর্খের মতো রাজনীতি করছে। রাজ্যে যে কর্মসংস্থান নেই, নিজেরাই তা প্রমাণ করছে।’’ শ্যামলবাবুর কটাক্ষ, ‘‘ওদের নেতানেত্রীর মুখ দিয়ে যে মণি-মুক্তো ঝরে, বেকারত্ব ঘোচাতে ওরা বরং সেগুলো বিক্রি করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy