Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘দিল’ নিয়ে সচেতনতার পাঠ গ্রামে

হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ফলেই জীবন ফিরে পেয়েছেন দেওঘরের দিলচাঁদ সিংহ। এখন সেই ‘মসিহা’র কথা বলেই স্কুল কিংবা গ্রামের যে কোনও অনুষ্ঠানে অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরছেন দিলচাঁদ।

  সাংবাদিক বৈঠকে দিলচাঁদ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

সাংবাদিক বৈঠকে দিলচাঁদ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪৭
Share: Save:

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান মাত্র! ঝাড়খণ্ডের পরিবারটি ‘মসিহা’ হিসেবে খুঁজে পেয়েছিল কর্নাটকের এক মৃত যুবক ও তাঁর পরিবারকে। ওই মৃত যুবকের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ফলেই জীবন ফিরে পেয়েছেন দেওঘরের দিলচাঁদ সিংহ। এখন সেই ‘মসিহা’র কথা বলেই স্কুল কিংবা গ্রামের যে কোনও অনুষ্ঠানে অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরছেন দিলচাঁদ।

জটিল অসুখে কার্যত মরতে বসেছিলেন ঝাঁঝির প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ৩৯ বছর বয়সী দিলচাঁদ। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছিল না প্রতিস্থাপনযোগ্য হৃৎপিণ্ড। সেই সময়ে বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা হওয়া এক যুবকের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পরিজনেরা। সেই যুবকের হৃৎপিণ্ড ২১ মে বিমানে চাপিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। চেন্নাই ও কলকাতার কার্ডিওথোরাসিক চিকিৎসকদের দল আনন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে সেটি দিলচাঁদের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন। এটিই পূর্ব ভারতে প্রথম সফল হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন। কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থাকার পরে দেওঘরের বাড়িতে ফেরেন দিলচাঁদ।

শনিবার আনন্দপুরের হাসপাতালে কিছু শারীরিক পরীক্ষা করাতে এসে সচেতনতা প্রচারের কথা শোনালেন ওই স্কুলশিক্ষক। বললেন, তাঁর গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান জয়নারায়ণ রাউত দিলচাঁদ হাসপাতালে থাকার সময়েই সংবাদপত্র পড়ে হৃৎপিণ্ড দানের ব্যাপারে ধারণা পেয়েছিলেন। দিলচাঁদ গ্রামে ফিরতেই দু’জনে মিলে অঙ্গদানের প্রয়োজনীয়তা প্রচারের কাজ করছেন। স্কুলে পড়ানোর ফাঁকেও পড়ুয়াদের এ ব্যাপারে সচেতন করছেন দিলচাঁদ। ‘‘অঙ্গদান কী ভাবে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে তা নিজে বুঝেছি। আরও যাতে অনেক প্রাণ বাঁচে তাই এই কাজ করছি,’’ বলছেন তিনি। নতুন ‘হৃদয়’ নিয়ে এখন রোজ হেঁটে স্কুলেও যাচ্ছেন তিনি। তবে দিলচাঁদের চিকিৎসক কার্ডিওথোরাসিক সার্জেন কে এম মন্দনা জানান, প্রতিস্থাপনের পরে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া জরুরি। অন্তত টানা দু’বছর ‘অ্যান্টি-রিজেক্ট’ ওষুধ খেতে হবে। ছ’সপ্তাহ অন্তর রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে হবে ওষুধ কতখানি কাজ করছে।

কার্ডিওথোরাসিক সার্জেন তাপস রায়চৌধুরী বলছেন, এ রাজ্যেও প্রতি জেলাতে অঙ্গদান নিয়ে জোরদার প্রচার হোক। দাতাদের পরিবারকে আইনি জটিলতার ফাঁদে যাতে পড়তে না হয় সে ব্যাপারেও সক্রিয় হোক প্রশাসন। তাঁর কথায়, ‘‘তা হলে আরও অনেক দিলচাঁদ মৃত্যু এড়াতে পারবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Health Education Rare Operation Dilchand Singh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE