বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
গুলির পরে এ বার গোলার হুমকি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। সেই সঙ্গেই তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমরা ভদ্রলোকের রাজনীতি করতে আসিনি।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর সমর্থনে রবিবার নৈহাটির কাঠগোলা মোড় থেকে সাহেব কলোনি জলের ট্যাঙ্ক মাঠ পর্যন্ত ‘অভিনন্দন যাত্রা’ করে বিজেপি। তার পরে সেখানে সভায় দিলীপবাবু বলেন, ‘‘যারা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট করবে, তাদের গুলি করে মারা হবে। আমরা ক্ষমতায় এলে গুলির পর গোলাও চালাব। আমার কথা যাঁর হজম হবে না, তিনি হোমিওপ্যাথি ওষুধ খান।’’ রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিজেপির নেতা-কর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’য় জড়ানোর অভিযোগ তুলে তিনি আরও হুমকি দেন, ‘‘কেস খেতে হলে পালিশ করেই কেস খাব।’’ সেই সূত্রেই দিলীপবাবু জানান, তাঁরা ভদ্রলোকের রাজনীতি করতে আসেননি। তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, ‘‘ভিন্ন সম্প্রদায়ের ৫০ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী, যাঁরা ও-পার বাংলা থেকে এ দেশে এসে ঘাঁটি গেড়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে প্রথমে ভোটার কার্ড থেকে নাম কাটা হবে। তার পরে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেব।’’
দিলীপবাবুর এ হেন মন্তব্যে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভাষাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, ওঁরা কী করতে এসেছেন। ওঁরা যত এগুলো বলছেন, ততই মানুষ ওঁদের চিনে নিচ্ছে। দিলীপবাবুরা নিজেরাই নিজেদের দলের কবর খুঁড়ছেন।’’
নৈহাটির সভায় দিলীপবাবু এ দিন ফের তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দেন। নৈহাটিতে কয়েক দিন আগের বোমা বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ তুলে তিনি ফের বলেন, ‘‘এ রকম বোমা বাপের জন্মে দেখিনি! এত বড় বিস্ফোরণ হয়েছে। তা-ও তৃণমূল বলছে, ছোট ঘটনা।’’ এ দিনই সিএএ-র সমর্থনে বসিরহাটে দলীয় সভায় বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বিশিষ্ট জনেদের ‘তৃণমূলী কুকুর’ এবং ‘শয়তান’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার কয়েক জন তৃণমূলী কুকুর বুদ্ধিজীবী ছাড়া কি বাংলায় আর কোনও বুদ্ধিজীবী নেই? কামদুনি, পার্ক স্ট্রিট, বোমা-কাণ্ডের সময় ওঁরা কোথায় থাকেন?’’
বিজেপি নেতাদের একের পর এক কুকথার প্রতিবাদে সরব হয়েছে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থবাবু বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বার সভাপতি হওয়ার পরে দিলীপবাবুকে হয়তো বলা হয়েছে, আপনাকে আর কিছু করতে হবে না। আপনি শুধু গদা আর অস্ত্র নিয়ে ঘুরুন। যে হেতু বিজেপির জনসমর্থন নেই, তাই শুধু গোলা-গুলির সমর্থনে চলতে চাইছে ওরা। আর সৌমিত্রর বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি নেতাদের মধ্যে কুকথা বলে সংবাদের শিরোনামে আসার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।’’ এর পরে পার্থবাবুর সংযোজন, ‘‘বাংলার মানুষ সংস্কৃতি সচেতন। তাঁরা যা বোঝার, বুঝছেন।’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের মতো দুর্মুখ বিজেপি নেতারা প্রতিদিন বিষোদ্গার করে নিম্ন রুচির নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছেন। যাই হোক, তিনি ঠিকই বলেছেন, তাঁর দল এ সব পছন্দ করে। বাংলার মানুষ কিন্তু এই ঔদ্ধত্য এবং ঘৃণার শেষ দেখবেন।’’ রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘দিলীপবাবুর মনে রাখা উচিত, যিনি জিহ্বাকে সংযত করতে পারেন না, তিনি রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারেন না। আর অশালীন মন্তব্য এবং গোলা-গুলি দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy