Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Didir Doot

সংসার জুড়ে দিন, আর্জি শুনে বিব্রত ‘দিদির দূত’

গ্রামে গ্রামে গিয়ে ‘দিদির দূতেরা’ বেশ কিছু দিন ধরেই নানা অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। গ্রামের অনুন্নয়ন, স্বজনপোষণের নালিশ শুনতে হচ্ছে।

বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ফাইল চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৬
Share: Save:

সুন্দরবনের বাঘকে খাঁচাবন্দি করতে পারেন তিনি।

চাইলে হাতির গতিপথও ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

কিন্তু গ্রামের বৃদ্ধার পুত্রবধূকে কী কৌশলে ফিরিয়ে দেবেন বাড়িতে!

গ্রামে গ্রামে গিয়ে ‘দিদির দূতেরা’ বেশ কিছু দিন ধরেই নানা অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। গ্রামের অনুন্নয়ন, স্বজনপোষণের নালিশ শুনতে হচ্ছে। তবে শুক্রবার যে সব সমস্যা সমাধানের আর্জি শুনলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাতে রীতিমতো বিব্রত তিনি।

শুক্রবার সকালে মন্ত্রী গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায়। তরঙ্গহাটিতে চেয়ার-টেবিল পেতে বসে শুনছিলেন মানুষের সমস্যার কথা।

সামনে পাতা চট। গ্রামবাসীরা বসে। একে একে উঠে এসে মন্ত্রীকে কেউ বলছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই, কেউ বলছেন লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা পান না। এক মহিলা মন্ত্রীকে এসে বললেন, ‘‘আমার বৌমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিন।’’

সমস্যার কথা লিখছিলেন মন্ত্রী। মহিলার কথা শুনে থেমে গেল কলম। মহিলা তখন বলে চলেছেন, ‘‘আমার সংসারটা ভেঙে যাক, চাই না। কয়েক বছর আগে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলাম। নাতনি আছে। সব ভালই চলছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে বৌমা বধূ নির্যাতনের মামলা করেন। আমরা জামিন পাই। পরে বৌমা ফিরে আসেন। কিন্তু দু’বছর হল নাতনিকে নিয়ে ফের বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন।’’

থতমত খেয়ে যান জ্যোতিপ্রিয়। একটু সামলে নিয়ে বলেন, ‘‘এ সব পারিবারিক বিষয়। এর মধ্যে আমাদের ঢোকা উচিত নয়।’’

মহিলা হতাশ। পরে বলেন, ‘‘উনি না পারলে আমরা আর কার কাছে যাই!’’

জ্যোতিপ্রিয়ের বক্তব্য, ‘‘আসলে মানুষ ভাবেন, মন্ত্রীরা হয়তো সব সমস্যারই সমাধান করে দিতে পারেন। কিন্তু আমার কতটুকু ক্ষমতা! বনমন্ত্রী হিসাবে হয় তো হাতি চলাচলের রুট ঠিক করে দিতে পারি। সুন্দরবনের বাঘকে আটকে রাখতে পারি। চিড়িয়াখানায় জন্তু-জানোয়ারদেরও আটকাতে পারি। কেউ গাছ কাটলে তাকে ধরতে পারি।’’

জ্যোতিপ্রিয় অবশ্য জানান, পঞ্চায়েত প্রধানকে বলেছেন, পাড়ার লোকজনকে নিয়ে আলোচনা করে মহিলার সমস্যার সমাধান করতে। তবে কোনও ভাবেই যেন তাতে রাজনীতির রং না লাগে।

আমনকান্দিয়া এলাকায় এক মহিলা আবার মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে বলেন, ‘‘স্বামী তিন বছর ধরে বাড়িতে থাকতে দেন না। আমার ভাঙা সংসারটা জোড়া লাগিয়ে দিন।’’

মন্ত্রীর আর একপ্রস্ত বিব্রত হওয়ার পালা। তিনি তরুণীকে বুঝিয়ে বলেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রী নিজেরা আলোচনায় বসুন। দল এর মধ্যে হস্তক্ষেপ করবে না। প্রধানকে বলেছি এক বার আলোচনা করে দেখতে, যদি সমস্যা মেটানো যায়।’’

কর্মসূচি সেরে খানিক স্বগতোক্তির ঢঙেই মন্ত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘বাপ রে, কী চাপ!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Didir Doot Jyotipriya Mallick TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy