নতুন দায়িত্বের পথে।
তিনি এলেন, জিতলেন এবং মন্ত্রী হলেন।
শুক্রবার যখন পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে কলকাতার রেড রোডে দাঁড়িয়ে শপথ বাক্য পাঠ করছেন জেমস কুজুর, বহু দূরের কুমারগ্রাম তখন উচ্ছ্বাসে ভাসছে। অসম সীমানা থেকে সামান্য দূরে এই জনপদ। ভুটান সীমান্তও বেশি দূরে নয়। বড় এলাকা জুড়ে চা বাগান। সেখানে তো বটেই, শামুকতলা, ভাটিবাড়ি, তুরতুরি মায় পাহাড়ি গ্রাম ময়নাবাড়ি— সর্বত্র দলীয় কর্মী সমর্থকরা রীতিমতো আনন্দ উৎসবে মেতে উঠলেন। কোথাও ঢাক ঢোল, কোথাও আবার মাদল ধামসা নিয়ে নাচগান ও আবীর খেলায় মেতে উঠলেন তাঁরা।
সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, কুজুরকে দেওয়া হল আদিবাসী উন্নয়ন দফতর। তখন এলাকার মানুষের আলোচনায় একটিই বিষয়, এক চালে বড় বাজি মাতের লক্ষ্য নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কী ভাবে? কুমারগ্রাম থেকে কুজুর জিতেছেন ঠিকই, কিন্তু এই এলাকার চা বাগানগুলিতে তৃণমূলের সংগঠন একেবারেই ভাল নয়। বরং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং আদিবাসীদের প্রভাব এখানে অনেক বেশি। এই দুইয়ের উপরে ভর করে এলাকায় বিজেপির চোখে পড়ার মতো উত্থান হয়েছে। তারা মাদারিহাট আসনটি জিতেছে। এই অঞ্চলের অন্য আসনগুলিতেও তারা নিজেদের ভোট যথেষ্ট পরিমাণে বাড়িয়ে নিয়েছে।
অনেকেই মনে করছেন, আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রকে কুজুরের মতো এক জন চা বলয়ের মানুষকে নিয়ে এসে মোক্ষম চাল দিলেন মমতা। কুজুর আদিবাসী এবং এক সময়ের দক্ষ পুলিশ অফিসারও বটে। এলাকাটি তাঁর ভাল মতোই চেনা। তাই তাঁর মাধ্যমে এখানকার আদিবাসীদের কাছে পৌঁছতে পারবে প্রশাসন। আদিবাসী উন্নয়নে আরও কাজ করতে পারবে সরকার।
তৃণমূলের চা শ্রমিক নেতা রাজু লামা ও অঞ্জু ঘোষদের কথায়, বাম আমলে চা শ্রমিক-সহ এলাকার আদিবাসীরা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। এই সরকার তাদের উন্নয়নে কতটা আন্তরিক, কুজুরকে মন্ত্রী করে ফের সে বার্তা দিল। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা খুবই খুশি।’’ কুমারগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দুলাল দে, আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক সভাপতি অরুণ দাসরাও একই কথা বলেছেন।
বস্তুত, এই প্রথম কোনও পূর্ণমন্ত্রী পেল কুমারগ্রাম। এর আগে বাম আমলে পূর্ত দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল দশরথ তিরকেকে। এ বার পুলিশের উচ্চ পদের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে ভোট দাঁড়িয়েছিলেন কুজুর। এবং বাম দুর্গে ধস নামিয়ে হইহই করে জিতেছেন তিনি।
আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি ও কুমারগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক সমীর দত্ত বলেন, ‘‘কুমারগ্রামে দীর্ঘ ৪০ বছর বামফ্রন্টের বিধায়ক থাকলেও কোন উন্নয়ন হয়নি। গত চার বছরে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে মাত্র। কুমারগ্রাম থেকে জেমস কুজুর আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী হওয়ায় আদিবাসী ও চা শ্রমিকদের উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ হবে।’’ বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা জানান, ‘‘কুমারগ্রামের বিধায়ককে আদিবাসী মন্ত্রী করা হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে। আমরা চাই নতুন মন্ত্রী সে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হবেন। বিশেষ করে এলাকার চা বাগানের দুরবস্থা দূর হবে। এটি অসম ও ভুটান সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও ভাল করার চেষ্টাও কুজুর সাহেব করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy