প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বঞ্চনার অভিযোগ সামনে রেখে তুলে নেওয়া ‘অস্ত্র’ কি ধার হারাবে! দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বুধবারের বৈঠকের পরে এই চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। দলের একাংশ মনে করছে, প্রাপ্য নিয়ে শুরু আন্দোলনে এগিয়েও আলোচনার টেবিলে দলের রাজনৈতিক লক্ষ্য ‘ধাক্কা’ খেতে পারে।
লোকসভা ভোটের মুখে কৌশলে কি ভুলই করল তৃণমূল? বিশেষ করে, রাজ্যের প্রাপ্য আদায়ে দল যে পথ নিয়েছে, তাতে তৃণমূলেই এই সংশয় মাথা তুলেছে। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ বন্ধ করে রাজনৈতিক লক্ষ্যেই বিজেপি দুর্নীতির কথা প্রচার করছে। ফলে, এটা স্পষ্ট, লোকসভা ভোটের আগে সেই টাকা ছেড়ে দিয়ে নিজেদের লক্ষ্যে নিজেরাই বাধা তৈরি করবে না।’’ সে ক্ষেত্রে দিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসার ফলে দলের আন্দোলন সম্পর্কে জনমানসে ‘ভিন্ন বার্তা’ গেলে তৃণমূলের ক্ষতি হবে বলেই মনে করছে দলের একাংশ। তাঁদের ধারণা, এ দিনের বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর যে অবস্থান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সামনে এনেছেন, তাতেও তৃণমূলের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ‘প্রাপ্তি’ নেই। বরং, দুই সরকারের আধিকারিকদের দেখিয়ে দিয়ে মোদী জট খোলার দায়িত্ব মমতার দিকেই ঠেলে দিয়েছেন!
রাজ্যে শাসক দলের অন্দরের এই চর্চায় ফিরে এসেছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনায় বকেয়া আদায়ের আন্দোলনের প্রসঙ্গ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই দাবিকেই রাজ্যের প্রতি ‘বঞ্চনা’ হিসেবে তুলে ধরেছিল তৃণমূল। দলের মতে, আন্দোলনের ঝাঁঝে দুর্নীতির অভিযোগকে ছাপিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল, তার প্রমাণ সদ্য পেরিয়ে আসা পঞ্চায়েত ভোট। তার পরে দুই সরকারের শীর্ষ স্থানীয়দের বৈঠকের পরে কেন্দ্রের শাসকের বিরুদ্ধে তৃণমূলের তোলা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র অভিযোগ বিশ্বাস হারাতে পারে বলেও দলের এই অংশের আশঙ্কা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে আন্দোলনের সেই ঝাঁঝ ফেরানো যাবে কি না, তা-ও দলের এই চর্চার অন্যতম বিষয়।
শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের প্রাপ্য আদায়ে তৃণমূলের আলোচনায় রয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ বিন্যাসের বিষয়টিও। এই দাবিকে সামনে রেখে প্রায় দু’মাস রাজ্য জুড়ে ব্যতিক্রমী প্রচারে নেমেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথমে দিল্লিতে কেন্দ্রের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর দফতর ও পরে কলকাতায় রাজভবনের বাইরে প্রাপ্যের দাবিতে ‘রণং দেহি’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন অভিষেক। রাজভবনের সামনে থেকে ধর্না তুলে নেওয়ার সময় অভিষেক ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, টাকা না পেলে এই আন্দোলনের ‘শেষ’ দেখে ছাড়বেন তাঁরা। সেই অভিষেককেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত দেখে দলের কেউ কেউ মনে করছেন, তা হলে কি আন্দোলনে আপাতত ইতি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy