বিজেপির সদর দফতরে সুকান্ত মজুমদার পতাকা তুলে দিচ্ছেন দিব্যেন্দুর হাতে। নিজস্ব চিত্র।
মাস কয়েক আগেই বীরভূমের জমি দখল নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন পদ্মশ্রী প্রাপ্ত শিল্পী পূর্ণদাস বাউল এবং তাঁর পুত্র দিব্যেন্দু দাস। শুক্রবার সেই দিব্যেন্দু নাম লেখালেন পদ্ম শিবিরে। রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে তাঁকে দলের নাম এবং প্রতীক দেওয়া উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর উপস্থিতিতেই বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন দিব্যেন্দু। শুক্রবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘একটা বাড়ি, রাজ্য বা দেশের উন্নতির জন্য স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতির প্রয়োজন। আপনারা সকলেই জানেন, বাংলার এখন কী অবস্থা! আমি সাধারণ মানুষের কাছে নিজের বক্তব্য পৌঁছে দিতে চেয়েছিলাম। আর সেই জন্যই আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।’’ পঞ্চায়েত ভোটমুখী রাজ্যে দিব্যেন্দুর বিজেপিতে যোগদানকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
এক দিকে বীরভূমের মতো জেলার বাসিন্দা দিব্যেন্দু। যেখানে শাসকদল তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এই মুহূর্তে জেলবন্দি। তা ছাড়া দিব্যেন্দু বাউল শিল্পী হিসাবেও জনপ্রিয়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট চলাকালীন শিল্পী মহলের অনেকে বিজেপিতে যোগ দিলেও পরে বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পূর্ণদাস বাউলের পুত্রের বিজেপিতে যোগদান, বিজেপিকে কিছুটা সুবিধা দিলেও দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাজ্যে যখন পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন, সেই আবহে এই যোগদান আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কলকাতায় বিজেপির সদর দফতরে লাল পাঞ্জাবি পরা দিব্যেন্দুকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কি পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হবেন? জবাবে দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘দল যদি প্রার্থী করতে চায় অবশ্যই হব। এখন আমি নরেন্দ্র মোদীর দলের সদস্য। আমার রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি যে ভাবে নির্দেশ দেবেন আমি সে ভাবে এগোব।’’
উল্লেখ্য, জানুয়ারি মাসেই জমি দখল নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন বাউল সম্রাট পূর্ণদাস। ১৯৭৭ সালে ইলামবাজার থানার কামারপাড়া মৌজায় রাস্তার ধারে চার বিঘা জমি কেনেন তিনি। কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে সেই জমি ধীরে ধীরে জবরদখল হতে শুরু করে বলে অভিযোগ ছিল শিল্পীর। এই মর্মে বাউল শিল্পীর পরিবার জেলাশাসক ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানায়। এমনকি একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন বাউল শিল্পী। জানুয়ারিতে সেই জমির মাপজোকের কাজ শুরু হলেও শিল্পী এবং তাঁর পুত্র দিব্যেন্দু বলেছিলেন, “এই জমি দখলের পিছনে জমি মাফিয়াদের মদত রয়েছে। আমার মনে হয় শাসকদলও এর সঙ্গে যুক্ত। তা না হলে আমি এতদিন ধরে অভিযোগ জানাচ্ছি, তা সত্ত্বেও নির্মাণ কাজ চলে কী ভাবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy