দীপক হালদার। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল ছাড়লেন ডায়মন্ডহারবারের বিধায়ক দীপক হালদার। সোমবার জানা যায়, তিনি স্পিড পোস্টে চিঠি পাঠিয়ে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। দু’টি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন দীপক। প্রথমটি পাঠানো হয়েছে দলের সদর কার্যালয় তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে। অন্যটি গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তীর কলকাতার হরিদেবপুরের বাড়ির ঠিকানায়। বাম জমানায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের সংগঠন মজবুত করতে যে কয়েকজন নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন, তাঁদের মধ্যে দীপক অন্যতম। জেলার রাজনীতিতে তিনি পরিচিত ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলেই। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, শোভনের হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে দীপকের বিজেপি-তে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল দীপকের। সমাজ মাধ্যমে দীপক প্রায়শই অভিযোগ করতেন, এলাকার বিধায়ক হলেও তাঁকে এড়িয়েই কাজ করছে প্রশাসন। এমনকি, সরকারি কোনও অনুষ্ঠানেও ডাকা হয় না তাঁকে। নয়ের দশক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী ছিলেন দীপক। ফলস্বরূপ ২০১১ সালে ডায়মন্ডহারবারে তাঁকে প্রার্থী করেন মমতা। জিতে বিধায়ক হন তিনি। কিন্তু এর পরেই জেলার রাজনীতিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। একটি গন্ডগোলের ঘটনায় ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু অল্প কয়েক মাসের শাস্তির পর দলে ফিরিয়ে ২০১৬ সালে ফের ডায়মন্ডহারবারে প্রার্থী করা হয় দীপককে। সে বারও জেতেন তিনি।
মূলত যুব নেতাদের দাপটেই মমতার সঙ্গে ৩০ বছরের সম্পর্কে ইতি টানতে চলেছেন দীপক, এমনটাই মত তাঁর ঘনিষ্ঠদের। বর্তমানে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ মুখ্যমন্ত্রী ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বেই জেলার রাজনীতিতে এখন যুবনেতাদের বাড়বাড়ন্ত। জেলার এক প্রবীণ নেতার বক্তব্য, সেই কারণেই জেলার রাজনীতিতে ‘কোণঠাসা’ হয়ে পড়ছিলেন দীপক। নিজের দল ছাড়া প্রসঙ্গে সোমবার দীপক বলেন, ‘‘অনেক বছরের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল। আমি চিঠি দিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা দলকে জানিয়ে দিয়েছি।’’ তিনি কি বিজেপি-তে যাচ্ছেন? দীপক বলেন, ‘‘আমি দল ছাড়ার পর ডায়মন্ডহারবারের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি। তাঁদের পরামর্শ নিচ্ছি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেব।’’ দীপকের দলত্যাগের চিঠি জেলা সভাপতি শুভাশিসের বাড়িতে গেলেও সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি দিল্লিতে। তাই শুভাসিস ওই চিঠি পাননি বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানানো হয়েছে।
গত শনিবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল ও বৈশালী ডালমিয়ারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন। রবিবার ডুমুরজলার জনসভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনে কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সংগঠন ভাঙবেন। দীপককে দিয়েই সেই ভাঙনের সূচনা হচ্ছে বলে মনে করছে তৃণমূলের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy