ডোমজুড় বাজারে নিত্যদিনের ছবি। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।
ডোমজুড় হাসপাতালের সামনে থেকে সিটিসি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাস, লরি ও ছোট গাড়ি। মাঝে আড়াআড়ি আটকে গিয়েছে একটি মোটর সাইকেল। সকাল, দুপুর, সন্ধে--ডোমজুড় বাজারে যে কোনও সময় ঢুঁ মারলেই চোখে পড়বে যানজটের এই নিত্য ছবি। এলাকার মানুষের অভিযোগ, যান নিয়ন্ত্রণের জন্য সাধারণ পুলিশ ও সিভিক পুলিশ থাকলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। শুধু ডোমজুড় বাজার নয়, ডোমজুড় ব্লকের মাকড়দহ, আন্দুল, বাঁকড়া-সহ বেশ কিছু বাজার এলাকায় তীব্র যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ডোমজুড় বাজার চত্বরে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য ডোমজুড় থানা ও বিডিও অফিসে একাধিকবার দরবার করেছেন তাঁরা। কিন্তু ডোমজুড়ে যানজট মুক্তির স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে। ডোমজুড় বাজারে চত্বরে রয়েছে দু’টি স্কুল। সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত স্কুলমুখী ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় থাকায় যানজট বাড়ে। যানজটের আরও একটি কারণ, রাস্তার উপরেই অপরিকল্পিত ভাবে বসে পড়া কাঁচাবাজার ও অন্যান্য জিনিসের দোকান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে বাস, ট্রেকার ও অটো যাত্রী ওঠা নামা করানোয় যানজট হত। সমস্যা মেটাতে ডোমজুড় থানার পাশে তৈরি করা হয় বাস, ট্রেকার, অটো স্ট্যান্ড। হাওড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে তৈরি হওয়া এই বাসস্ট্যান্ড পুরোদস্তুর চালুও হয়ে গিয়েছে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে মোট ১ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেনা ১৯ হাজার বর্গফুট জমির উপরে এই বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়েছে। এখান থেকেই বর্তমানে বাস, ট্রেকার ও অটো ছাড়ে। কিন্তু তারপরেও যানজট সমস্যার সমাধান হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা প্রবাল বন্দ্যোপাধ্যায় (ফুচুন) বলেন, “রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে মোটরবাইক, ছোট গাড়ি দাঁড় করিয়ে বেপাত্তা হয়ে যায় চালক। শুধু সিভিক পুলিশ দাঁড় করিয়ে দিলেই হবে না। যানজট কমাতে জরুরি মানুষের সচেতনতা।”
শুধু ডোমজুড় নয়, যানজটের একই ছবি মাকড়দহ বাজার, বাঁকড়া বাজার, আন্দুল বাসস্ট্যান্ডের মতো ডোমজুড় ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জগৎবল্লভপুর, উদয়নারায়ণপুর এবং হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা গাড়িগুলি কলকাতা যাওয়ার জন্য মাকড়দহ হয়ে অঙ্কুরহাটি গিয়ে মুম্বই রোডে ওঠে। ফলে কলকাতায় কোনও রাজনৈতিক দলের সমাবেশ থাকলে তো বটেই, সাধারণ দিনেও ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত গাড়ির চাপে মাঝেমধ্যেই যানজটে মুড়ে যায় মাকড়দহ মোড়। আবার আন্দুল বাসস্ট্যান্ডের পাশে বাজার, দোকান ও সিনেমা হল থাকার জন্য এলাকায় ভিড় লেগেই থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর লতা আরও বাড়ে।
বাঁকড়া বাজারের সমস্যাটা একটু অন্যরকম। ঘিঞ্জি এই এলাকার পরিচিতি পোশাক শিল্পের জন্য। রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে রয়েছে পোশাক তৈরির বিভিন্ন উপকরণের দোকান। ফলে কলকাত ও অন্য জেলার পোশাক ব্যবসায়ীরা ছোট লরি, মোটর ভ্যানের মতো গাড়ি নিয়ে এই বাজারে মালপত্র কিনতে আসেন। রাস্তার উপরেই সেই সব গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে যানজট তৈরি হয়। তার উপর রয়েছে মোটর সাইকেলের চাপ। বেলা ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত যানজটের নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষ থেকে যানচালকদের।
যানজটের জটিল সমস্যা নিয়ে ডোমজুড়ের বিডিও তমোঘ্ন কর বলেন, “যানজট এড়াতে ব্লকের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ২-৩ জন করে সিভিক পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। রাস্তার উপরে যত্রতত্র মোটর সাইকেল দাঁড় করিয়ে রাখা, বাজার বসা বন্ধ করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে সমসা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।” ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বাবলু মণ্ডলের বক্তব্য, “রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু রাস্তার পরিসর বাড়েনি। তবে আগের তুলনায় ডোমজুড়ে যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। বাঁকড়ায় রাস্তার ধারে ছোট গাড়ি ও ট্রলি দাঁড়িয়ে থাকার ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের মেটানোর চেষ্টা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy