পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন আরএসপি নেতা। ছবি: সামসুল হুদা।
হুমকি, শাসানি সত্ত্বেও বুথ থেকে বেরোননি বাম এজেন্টরা। এই ‘অপরাধে’ মঙ্গলবার রাতে ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানার ঘুটিয়ারি শরিফের শ্রীনগরে বাম কর্মীদের বাড়িতে ও কারখানায় ঢুকে হামলা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের আরএসপি প্রার্থী সুভাষ নস্কর ও বামফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সুভাষবাবু। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দুই তৃণমূল সমর্থক আবদুল্লা শেখ ও নুর মহম্মদ খাঁকে শ্রীনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রুস্তম মোল্লা নামে এক সিপিএম সমর্থকের এমব্রয়ডারি কারখানায় ঢুকে দশ-বারোটি মেশিন ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাম সমর্থক বাকিবুল্লা জমাদার, সৈয়দ জমাদার, রইচ আলি সর্দার, নাজমিরা বিবির বাড়িতে ঢুকে মারধর, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট করা হয়। তৃণমূলের সমর্থকদের মারে মোসলেম মণ্ডল, রমজান সর্দার জখম হন বলে অভিযোগ। মোসলেমের দু’টি আঙুল ভেঙে গিয়েছে। তাঁর হাতের কব্জির নীচেও আঘাত লেগেছে।
বুধবার সকালে সুভাষবাবু আক্রান্তদের বাড়ি গেলে তাঁকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাকিবুল্লা। বলেন, “আমরা বামফ্রন্টের এজেন্ট ছিলাম। ওরা আমাদের বুথ থেকে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু আমরা শুনিনি। তাই ওরা আমাদের এই হাল করেছে।” রুস্তম মোল্লা বলেন, “একটু একটু করে টাকা জমিয়ে এমব্রয়ডারি কারখানাটা তৈরি করেছিলাম। ওরা এসে মেশিনগুলো ভেঙে দিল। এতে তো শুধু আমার না, গ্রামের যে জনা পঁচিশেক ছেলে এখানে কাজ করত তাদেরও ক্ষতি হল।” বাকিবুল্লার পুত্রবধূর অভিযোগ, ‘‘বাচ্চাদের খেতে দিয়েছিলাম। ওরা এসে লাথি মেরে ওদের খাবার ফেলে দেয়। প্রতিবাদ করতে আমার গালে চড় মারে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের আরও অভিযোগ, এলাকার সাত-আটটি বাড়ির ঘরের চাল থেকে আসবাব, সবই ভেঙে দিয়েছে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। বাসনপত্র, চাল-ডালও লুঠ করেছে তারা।
আক্রান্তদের মুখে এ সব কথা শুনতে শুনতে কেঁদে ফেলেন সুভাষবাবু। বলেন, “ওদের কী দোষ? আমাকে সমর্থন করে বুথের এজেন্ট হয়েছিল। তার জন্য তৃণমূলের লোক জন ওদের এই হাল করল।”
তবে ক্যানিং ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শওকত মোল্লা এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, “ভোটের দিন সিপিএম সমর্থক ওই পরিবারটির সদস্যেরা বুথে গিয়ে ঝামেলা করেছিল। তাতে আমাদের বেশ কয়েক জন জখম হয়। ভোটের পরের দিন তাদের পরিবার প্রতিবাদ করলে দু’পক্ষের আরও কয়েক জন জখম হয়। দু’পক্ষের ছোড়া ইটে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
ওই একই রাতে বামেদের এজেন্ট হওয়ায় বাসন্তীর চুনাখালির অবিনাশ বৈরাগীর বাড়িতে তৃণমূল হামলা চালিয়ে তার গরু, ছাগল-সহ বাড়ির সব কিছু লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy