পাঠভবনের অন্দরমহল। ইনসেটে সেই বাস।--নিজস্ব চিত্র।
আস্ত একটা বাস। চালকের সামনে উইন্ড স্ক্রিনে লেখা ভ্রাম্যমাণ পাঠভবন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই খোলা আকাশের নীচে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই পাঠভবন। এক সময় গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে ছুটে বেড়িয়েছে বাসটি। ভিতর ঢুকলে মনে হবে কোনও বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়েছি। বাসের গায়ে হলুদ রঙের উপর লেখা শিক্ষার প্রসার ঘটাতে এই ভ্রাম্যমাণ বিদ্যালয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে সর্বশিক্ষা দফতর যে পরিকল্পনা নিয়েছে এটা তারই অঙ্গ। ২০১১ সালে কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার কাছ থেকে বাসটি নিয়ে আনুমানিক ২ লক্ষ টাকা খরচ করে সেটিকে একটি পুরোদস্তুর ক্লাসরুমের রূপ দেওয়া হয়। জানলার ধার বরাবর গদিওয়ালা আসন। ছাত্রছাত্রীদের বসার জন্য বাসের মেঝেয় বিছানো কার্পেট। বাসের চারিদিক জুড়ে রয়েছে বই-খাতার শোকেস। রয়েছে ব্লাকবোর্ড এবং শিক্ষকদের জন্য চেয়ার। আলোর অভাবে যাতে পড়াশোনায় বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য পাখা-আলোরও সুবন্দোবস্ত রয়েছে। চালক ও সহকারি কর্মী সহ চার জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বাসে থাকবেন এমনটাই ঠিক ছিল। বাসটি তৈরি হওয়ার পর সর্বশিক্ষা দফতরের উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার প্রসারের জন্য ছুটে বেড়িয়েছে বাসটি। গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষের কাছে শিক্ষালাভের জন্য জনপ্রিয় হয়েছিল এই ভ্রাম্যমাণ পাঠভবন। এক একটি জায়গায় বাসটি দু-তিন দিন থাকত। তারপর অন্যত্র চলে যেত। গ্রামে বাস পৌঁছলে মুখে মুখে তা ছড়িয়ে যেত। বই-খাতা নিয়ে পাঠ নিতে ছাত্রছাত্রীরা বাসে চলে আসত।
সর্বশিক্ষা দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক অঞ্জন ঘোষ বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের কারণে ভ্রাম্যমাণ পাঠভবনটির দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ফের যাতে সেটি চালু করা যায় সে জন্য আলোচনা করা হবে।” জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “অনেকি দিন ব্যবহার না হওয়ার ফলে বাসটি অকেজো হয়ে পড়েছে। তবে নির্বাচন শেষ হয়েছে। বাসটিকে সারিয়ে ফের কাজে নামানোর চিন্তাভাবনা চলছে।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছে এই চলমান স্কুল। কিন্তু তারপর হঠাৎই বাসের শিক্ষাদানের গতি কমতে থাকে। বসে থাকতে থাকতে ক্রমশ অকেজো হওয়ার পথে এই ভ্রাম্যমাণ পাঠভবন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বেশ কিছুদিন বাসটি জেলাশাসকের দফতরে পড়ে ছিল। সংস্কারের অভাবে বর্তমানে এই পাঠভবন বেহাল হয়ে পড়েছে। এখন তার ঠাঁই চুঁচুড়া মাঠের ধারে খোলা আকাশের নীচে। থমকে গিয়েছে শিক্ষা প্রসারের গতি। জেলা পরিবহণ দফতর একবার বাসটি সারানোর ব্যবস্থা করেছিল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসটির জন্য স্থায়ী চালক না পাওয়ার জন্যই সেটিকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তবে বতর্মানে বাসটির যে অবস্থা তাতে সারানো যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy