Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
আরামবাগ পুরসভা

তৃণমূলের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে টাকা খরচের অভিযোগ সিপিএমের

আরামবাগ পুরসভায় সদ্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল বোর্ডের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা খরচের অভিযোগ তুলে সরব হল বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, কাজে গতি আনার নামে কেন্দ্রীয় সরকারের বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা খেয়ালখুশি মতো খরচ করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:১২
Share: Save:

আরামবাগ পুরসভায় সদ্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল বোর্ডের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা খরচের অভিযোগ তুলে সরব হল বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, কাজে গতি আনার নামে কেন্দ্রীয় সরকারের বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা খেয়ালখুশি মতো খরচ করা হচ্ছে। বস্তি এলাকায় সুসংহত আবাসন নির্মাণের ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে সরে গিয়ে প্রকল্পের টাকা বিক্ষিপ্ত ভাবে বিলি করছে পুরসভা।

বাম আমলে উপ পুরপ্রধান ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের দীপক সরকার। তৃণমূলে যোগ দিয়ে নতুন বোর্ডেও তিনি একই পদে আছেন। দীপকবাবুর বক্তব্য, ২০০৮ সাল থেকে ওই প্রকল্পের টাকা ফেলে রেখেছিল আগের সিপিএম বোর্ড। পড়ে থাকা প্রায় ৩ কোটি টাকা সুদ-সহ ফেরত দেওয়ার সরকারি নির্দেশও চলে এসেছিল। কিন্তু কাজটা অন্তত শুরু করেছে তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড। ক্রমশ বস্তির সার্বিক উন্নয়নের বন্দোবস্ত করা হবে। কিন্তু আগের বোর্ডে তিনিই উপ পুরপ্রধান থাকা সত্ত্বেও কেন পড়ে থাকল টাকা? দীপকবাবুর দাবি, আগের পুরপ্রধান সিপিএমের গোপাল কচ অন্যদের মতামতকে গুরুত্ব দিতেন না।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে গোপালবাবু বলেন, “প্রত্যেক কাউন্সিলরকে নিজের এলাকায় প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও দীপক সরকার-সহ অনেকেই তা করেননি। এখন তৃণমূলের আস্থাভাজন হতে অন্য রকম কথা বলছেন।” তাঁর দাবি, সে সময়ে ওয়ার্ড ধরে ধরে ১৩৭টি বাড়ি এবং সংশ্লিষ্ট ৪টি বস্তি এলাকা উন্নয়ন সম্পূর্ণ করা গিয়েছিল। কিন্তু বস্তির উপভোক্তা-পিছু টাকার অঙ্ক এতটাই কম ছিল যে প্রকল্পটির নিয়মকানুন মেনে তা বাস্তবায়িত করা ক্রমশ অসম্ভব হয়ে উঠছিল।

প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী, একটি বস্তির সার্বিক উন্নয়ন করার জন্য ওই বস্তির সমস্ত গরিব মানুষকে টাকা দিতে হয়। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন বস্তির বিভিন্ন মানুষজন বিক্ষিপ্ত ভাবে টাকা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। গত কয়েক দিন ধরে এ ভাবে ৩২০ জনকে বাড়ি নির্মাণের জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, এ ভাবে টাকা বিলি করে সরকারি টাকার অপব্যবহার করছে তৃণমূল।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মফস্সল এলাকার বস্তি উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের জওহরলাল নেহেরু ন্যাশনাল আরবান মিশনের অধীন প্রকল্পটির নাম ‘ইনটিগ্রেটেড হাউসিং স্ল্যাম ডেভলপমেন্ট প্রোগাম’। ওই প্রকল্পে ২০০৮ সাল নাগাদ আরামবাগ পুরসভা ১০ কোটি টাকা অনুমোদন পায়। প্রথম দফায় টাকা হাতে পায় প্রায় ৩ কোটি টাকা। প্রকল্প রূপায়ণের নিয়ম অনুযায়ী বলা ছিল, বস্তি এলাকায় উপভোক্তা পিছু ২৭০ স্কোয়ার ফুট জায়গা জুড়ে ঘর হবে। উপভোক্তা পিছু অর্থ বরাদ্দ ১ লক্ষ টাকা। সেই টাকার উপভোক্তারা মাথা পিছু ১৬ হাজার টাকা দেবেন। বাকি ৮৪ হাজার টাকার ৮০ শতাংশ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার, ১৫ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার এবং বাকি ৫ শতাংশ দেবে পুরসভা।

প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোপাল কচের দাবি, মাত্র ১ লক্ষ টাকায় নির্দিষ্ট মাপের ঘর নির্মাণ সম্ভব হচ্ছিল না। উপভোক্তাদের মধ্যেও এককালীন ১৬ হাজার টাকা দেওয়ার মত সামর্থ্য কম ছিল। সে কারনেই গতিহীন হয়ে পড়েছিল প্রকল্পটি। ২০০৮ সাল থেকেই রাজ্যের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল, রাজ্য সরকার যেন তাদের অংশদারিত্বের পরিমাণ বাড়ায়। কিন্তু কিছুই হয়নি। বর্তমানে বিক্ষিপ্ত ভাবে টাকা বিলি করে প্রকল্পটির বাস্তব রূপায়ণ কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলে মতামত জানিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

arambag municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE