এক বছর ধরে মিলছে না ইন্দিরা আবাস যোজনার শংসাপত্র, আরামবাগের মায়াপুর-২ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে বিডিও-র দ্বারস্থ হলেন ওই প্রকল্পে এক উপভোক্তার মেয়ে।
মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা, শেফালি সাঁতরা নামে বিপিএল তালিকাভুক্ত বছর সাতষট্টির ওই উপভোক্তা গত বছর ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন ওই পঞ্চায়েত এলাকার ডিহিবয়রা গ্রামে। মেয়ে সুমিতা দলুইয়ের বাড়ির পাশে, জামাইয়ের দেওয়া জায়গায়। দিন দশেক আগে শেফালিদেবী মারা যান। বাড়িটি এখনও অসমাপ্ত। তাঁর মেয়ে বিডিও-র কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, সিপিএমের পঞ্চায়েত বোর্ডের মনোনীত উপভোক্তা বলেই তাঁর মা প্রথম কিস্তির টাকা খরচের যথাযথ কাগজপত্র জমা দেওয়া সত্ত্বেও পঞ্চায়েতের নতুন তৃণমূল বোর্ড শংসাপত্র দিচ্ছে না। ফলে, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মিলছে না।
পঞ্চায়েতের এক কর্তা জানান, সাধারণ ভাবে উপভোক্তা যে সংসদ এলাকার বাসিন্দা, সেখানেই ওই প্রকল্পে বাড়ি করার নিয়ম। এ ক্ষেত্রে ওই উপভোক্তা অঙ্গীকারপত্রে যে দাগ নম্বরের জমিতে বাড়ি তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন, সেখানেই তিনি বাড়ি করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। সুমিতাদেবীর দাবি, “মায়ের থাকার জন্য আমার স্বামী যে জমি দিয়েছেন, সেই দাগ নম্বরই অঙ্গীকারপত্রে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত এক বছর ধরে শংসাপত্র দিতে ঘোরাচ্ছে।”
পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের অলোক সাঁতরা বলেন, “শেফালিদেবী প্রথম কিস্তির টাকা পান সিপিএমের আমলে। তখনকার পঞ্চায়েত কেন শংসাপত্র দেয়নি? বৃদ্ধা যে সংসদ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন, আমরা সেখানে কোনও ঘর দেখতে পাইনি। উনি যে দাগ নম্বর জমা দিয়েছেন, সেখানেই বাড়ি হয়েছে কি না, তা দেখা হবে।” যেখানে বাড়িটি নির্মাণ হচ্ছে, সেই ডিহিবয়রা গ্রামের তৃণমূল সদস্য তথা দলের অঞ্চল সভাপতি অশোক পাত্র বলেন, “আমি শংসাপত্র দিচ্ছি না কারণ উপভোক্তা আমার সংসদের বাসিন্দা নন।” আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই বলেন, “নির্বাচনের পর সমস্যা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করাহবে।”
ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, শেফালিদেবীর নামে টাকা অনুমোদন হয় ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে। তখন পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। প্রথম কিস্তির ২২ হাজার ৫০০ টাকায় নির্মাণকাজ শুরুও হয়।
কিন্তু এক বছর আগে প্রথম কিস্তির টাকা সদ্ব্যবহার হলেও তখনকার পঞ্চায়েত কেন শেফালিদেবীকে শংসাপত্র দেয়নি, এই প্রশ্নে ডিহিবয়রা সংসদের তৎকালীন সিপিএম সদস্য অমর চক্রবর্তীর দাবি, “আমাদের আমলের শেষ দিকে রাজ্য পঞ্চায়েতের সার্বিক পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল বিডিওদের। আমাদের কিছু করার ছিল না।” ব্লক প্রশাসনের নির্মাণ সহায়ক অমল সরকার জানিয়েছেন, তাঁদের অনুসন্ধানের বিষয়বস্তু ব্লক প্রশাসনে জানিয়েছেন।
বিপিএল তালিকাভুক্ত বা সহায়-সম্বলহীন পরিবারের নতুন ঘর তৈরির এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দু’কিস্তিতে উপভোক্তাপিছু বরাদ্দ ৪৫ হাজার টাকা। প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তা সঠিক ভাবে সদ্ব্যবহার করেছেন, এই মর্মে গ্রাম পঞ্চায়েত মারফত শংসাপত্র পেলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা অনুমোদন করে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy