Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Swasthya Sathi Scheme

স্বাস্থ্যসাথীর পরেও বেড়েছে আমজনতার চিকিৎসা খরচ

জাতীয় খরচ সমীক্ষার পরিসংখ্যান বলছে, স্বাস্থ্যসাথী চালু হওয়ার এক বছর পর, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রাজ্যবাসীর পকেট থেকে চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিপিছু খরচ হয়েছে ২৯,৯০২ টাকা।

স্বাস্থ্যসাথী চালু হওয়া সত্ত্বেও আমজনতার চিকিৎসার খরচ তো কমেনি রাজ্যে।

স্বাস্থ্যসাথী চালু হওয়া সত্ত্বেও আমজনতার চিকিৎসার খরচ তো কমেনি রাজ্যে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:০৫
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্যসাথীর মতো স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প চালু হওয়া সত্ত্বেও আমজনতার চিকিৎসার খরচ তো কমেইনি, উল্টে বেড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় খরচ সমীক্ষায় এই তথ্য সামনে উঠে এসেছে।

নিজের বা পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার সময়ে আর্থিক ভার লাঘব করতে ২০১৬ সালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু আজ প্রকাশিত জাতীয় খরচ সমীক্ষার পরিসংখ্যান বলছে, স্বাস্থ্যসাথী চালু হওয়ার এক বছর পর, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রাজ্যবাসীর পকেট থেকে চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিপিছু খরচ হয়েছে ২৯,৯০২ টাকা। যা পরের বছর (২০১৮-১৯) পৌঁছে যায় ৩১,১১৫ টাকায়। এর অর্থ স্পষ্ট— স্বাস্থ্যসাথীর মতো স্বাস্থ্য বিমা চালু থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে আমজনতার পকেট থেকে চিকিৎসার খরচ বেড়েছে। এ ব্যাপারে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গকে ছাপিয়ে গিয়ে প্রথম হয়েছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮-১৯ সালে চিকিৎসা করাতে মাথাপিছু ৫৫,৮২৯ টাকা গুনেছেন উত্তরপ্রদেশের মানুষ। তার পরেই জায়গা পশ্চিমবঙ্গের।

তবে জাতীয় স্তরে বিচার করলে স্বাস্থ্য খাতে নাগরিকদের পকেট থেকে অর্থ খরচ করা অনেকটাই কমেছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে স্বাস্থ্যখাতে মোট খরচের ৬৯.৪ শতাংশ দেশের মানুষের পকেট থেকে গলে গিয়েছিল। পরবর্তী বছরে সেই খরচ নেমে আসে ৪৮.২ শতাংশে।

স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৪ শতাংশ খরচ করার জন্য অনেকদিন থেকেই সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভারত লক্ষ্যমাত্রা থেকে যে অনেক পিছিয়ে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য খরচ সমীক্ষা (২০১৮-১৯)। এখানকার পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে স্বাস্থ্যখাতে জিডিপি-র ১.২৮ শতাংশ ব্যয় করেছিল মোদী সরকার। যা তার আগের বছরের ব্যয়ের থেকে কম। ২০১৭-১৮ সালে জিডিপির ১.৩৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়েছিল। তবে বিনামূল্যে চিকিৎসা, সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যবিমার সুযোগের কারণে ওই সময়ে চিকিৎসাখাতে ব্যক্তির পকেট থেকে খরচের পরিমাণ জাতীয় গড় অনুযায়ী কিছুটা হলেও কমেছে। ব্যতিক্রম উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ।

রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি খাতে মিলিয়ে স্বাস্থ্যের পিছনে খরচ হয়েছিল ৫,৯৬,৪৪০ কোটি টাকা। যার মধ্যে সরকার খরচ করেছিল ২,৪২,২১৯ কোটি টাকা। যা জিডিপির মাত্র ১.২৮ শতাংশ। স্বাস্থ্যখাতে মোট খরচের মাত্র ৪০.৬১ শতাংশ। দীর্ঘ সময় ধরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারের গড়িমসি, বিনিয়োগের প্রশ্নে সদিচ্ছার অভাব, পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বেআব্রু করে দিয়েছে। বিশেষ করে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় পরিকাঠামোর অভাবে মারা গিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যখাতে অর্থ বিনিয়োগের প্রশ্নে রাজ্যগুলির অবস্থাও ততোধিক খারাপ। রাজ্যগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে অসম। সে রাজ্যের মোট জিডিপির ১.৬ শতাশ ব্যয় হয়েছে স্বাস্থ্যখাতে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে অঙ্কটি ১.১ শতাংশ। যা তার আগের বছরের থেকে সামান্য (০.১ শতাংশ) বেশি। পশ্চিমবঙ্গে ব্যক্তিপিছু স্বাস্থ্যখাতে সরকার ব্যয় করেছে ১,২০৯ টাকা। সেখানে রাজ্যে নিজের পকেট থেকে চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিপিছু খরচ হয়েছে ৩,২০৮ টাকা। ব্যক্তিপিছু সরকারি খরচের প্রশ্নে শীর্ষ রয়েছে কেরল। ওই রাজ্যে প্রতি ব্যক্তির চিকিৎসা খাতে ২,৪৭৯ টাকা খরচ করেছে কেরল সরকার।

অন্য বিষয়গুলি:

Swasthya Sathi Scheme
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE