রাজ্যে সর্বস্তরে সিপিএমের সঙ্গে জোট রক্ষা করে চলারই সিদ্ধান্ত নিল প্রদেশ কংগ্রেস।
বিধান ভবনে রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ডাকা বৈঠকে দলের নেতা ও বিধায়কেরা একযোগে জানিয়ে দিয়েছেন, বামেদের সঙ্গে জোট করে ভোটে ভাল ফল হয়েছে। আগামী দিনেও একসঙ্গে চলতে হবে। কংগ্রেস পৃথক আন্দোলন করলেও সেই মঞ্চে সিপিএম নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। বামেদের সঙ্গে জোট করার ক্ষেত্রে অধীরের সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, এ দিনের সভায় তাতে সিলমোহর পড়ল।
বাম শরিক সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব কংগ্রেসের সঙ্গে চলা নিয়ে সিপিএমকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আবার সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা জোট-রক্ষার পক্ষেই মত দিয়েছেন। এই ঘটনাপ্রবাহ মাথায় রেখেই এ দিনের বৈঠকে কংগ্রেস নেতাদের মত, জোট-রক্ষায় সিপিএম আন্তরিক হলেও বাম শরিকেরা আদৌ নয়। তাই বিভিন্ন জেলায় সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলা উচিত।
বৈঠকের পরে অধীর বলেন, ‘‘বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমের সঙ্গে আমরা জোট করেছিলাম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র যে ভাবে জোট রক্ষা করার কথা বলেছেন, তাকে সম্মান জানাই। শরিক দলের নেতারা কে কী বলছেন, সেটা তাঁদের ও সিপিএমের ব্যাপার।’’ বেশির ভাগ জায়গাতেই কংগ্রেসের সঙ্গে শরিক দলগুলির সমঝোতা হয়নি, স্মরণ করিয়ে দিয়ে অধীর বলেন, ‘‘এর ফলে ওই সব আসনে তৃণমূল ফল ভাল করেছে।’’ সিপিএম ও কংগ্রেসের একাংশের মতে, বাম শরিকদের ভূমিকা বহু জায়গাতেই প্রকারান্তরে তৃণমূলকে সাহায্য করেছে। বিধানসভায় বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেসের যে সব পদ পাওয়ার কথা, জোট রক্ষার স্বার্থে তা বামেদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হবে বলেও অধীর জানিয়েছেন।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী থেকে আরম্ভ করে বিধায়ক মানস ভুঁইয়া, শঙ্কর সিংহ, মনোজ চক্রবর্তী সকলেই জোট বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছেন এ দিনের বৈঠকে। মান্নান বলেন, ‘‘শুধু নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস নয়, মূল্যবৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলন জোটবদ্ধ ভাবে করলে শাসক দলের উপরে চাপ বাড়বে।’’ জোট-বার্তা জোরদার করতে কলকাতায় অধীর-সূর্যকান্তের যৌথ মিছিলের প্রস্তাবও দিয়েছেন মান্নান।
জোটের ফলেই দক্ষিণবঙ্গে বহু দিন বাদে কংগ্রেসের ফল ভাল হয়েছে বলে মত দিয়েছেন প্রদীপবাবু। শঙ্কর বলেছেন, শান্তিপুর বা রানাঘাটের মতো যে সব জায়গায় নিচু তলায় কংগ্রেস ও সিপিএম কর্মীরা সার্বিক ভাবে একজোট হয়েছেন, সেখানে ফল ভাল হয়েছে। পরাজিত হলেও অমিতাভ চক্রবর্তী, খালেদ এবাদুল্লার মতো নেতারা জেলা স্তরে জোটের পক্ষে সওয়াল করেছেন। মানসবাবু সওয়াল করেন, ‘‘এই জোট আরও আগে হলে ভাল হতো!’’ সিপিএমের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচির পাশাপাশি আরও বেশি করে কংগ্রেসের নিজস্ব কর্মসূচি উপরে জোর দিয়েছেন তিনি। সঙ্ঘ-বিজেপি’র প্রভাব কী ভাবে বাড়ছে, বিজেপির ভোট কী ভাবে তৃণমূলে গিয়েছে, তা ব্যাখ্যা করে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেন মানসবাবু। অসুস্থতার জন্য দীপা দাশমুন্সি আসতে না পারলেও জোট রক্ষার পক্ষেই তাঁর মত জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy