প্রতীকী ছবি
সামান্য বিদ্যুতের সংযোগের আবেদন। তা মঞ্জুর হলেই ঘরে বিজলি বাতি পেতে পারতেন পূর্ব মেদিনীপুরের উত্তর বাদলপুরের বাসিন্দা, পেশায় কৃষক খোকন মাইতি। কিন্তু তিনি তা পাননি। প্রশাসনের নানা মহলে আবেদন-নিবেদন করে কেটে গিয়েছে দশ-দশটি বছর। তবুও সুরাহা হয়নি তাঁর সমস্যার। অবশেষে চলতি মাসের গোড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন তিনি। সেই মামলায় শুক্রবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের নির্দেশ, তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে খোকনবাবুর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে।
খোকনবাবুর আইনজীবী শমীক বাগচী জানান, বিদ্যুৎ নাগরিকের জরুরি পরিষেবা। তা না পেয়ে এক জন নাগরিককে এ ভাবে ভুগতে হচ্ছে দেখে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। তার পরেই তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
আদালত সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা তৈরি করেছিলেন খোকনবাবুর কয়েক জন প্রতিবেশী। কারণ, খোকনবাবুর বাড়ি এমন জায়গায় রয়েছে যে নিকটবর্তী বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত সংযোগ দিতে গেলে প্রতিবেশীদের বাড়ির উপর দিয়ে তার নিয়ে যেতে হবে। নিজেদের বাড়ির উপর দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি তাঁরা। তাই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সংযোগ দেয়নি। তাঁদের যুক্তি, ওই অনুমতি না-পেলে অন্যের জমির উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া যাবে না। তবে এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, খোকনবাবুর ক্ষেত্রে বিকল্প পথ দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। তাই প্রতিবেশীদের আপত্তি ধোপে টেঁকে না। শমীকবাবু জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, খোকনবাবুর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে কেউ বাধা দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। স্থানীয় ওসিকেও এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
খোকনবাবু জানান, ২০১১ সালে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রতিবেশীর আপত্তির কারণ দেখিয়ে তাঁর বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়নি। পাড়ায় সবার ঘরে বিদ্যুতের বাতি জ্বললেও তাঁর ঘরে আলো পৌঁছয়নি। তিনি বলেন, “প্রশাসনের নানা জায়গায় আর্জি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। শেষে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy