একে বর্ষা এসেছে দেরিতে। তার উপরে তার দাপটও তেমন নেই। সব মিলিয়ে এ বার বৃষ্টি-ঘাটতি চলছে রাজ্যে। তার প্রভাব পড়ছে খরিফ চাষেও। কৃষি দফতর বলছে, জুনের শেষেও ৫০ শতাংশের বেশি বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা যায়নি। এর জেরে চাল উৎপাদনে সমস্যা হতে পারে। কারণ, এ বার সারা দেশেই বর্ষণে ঘাটতি থেকে যাবে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন।
সাধারণত, ৮ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢোকে। কিন্তু এ বছর মৌসুমি বায়ুর দুর্বলতায় এবং কেরলে বর্ষা ঢোকার পরে আরবসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ায় দেশে বর্ষা ছড়িয়ে পড়তে বাধা পায়। নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ১৮ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢোকার পরেও মৌসুমি বায়ুর দাপট তেমন ভাবে বাড়েনি। তার ফলে অনেক জেলাতেই এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। মৌসম ভবনের হিসেব অনুযায়ী ১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি ২৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
পর্যাপ্ত বৃষ্টি না-হওয়ায় ধানের বীজতলা তৈরিতে তার প্রভাব পড়েছে। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী অরূপ রায় জানান, আষাঢ়ের এই সময়ে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই ধানের বীজতলা তৈরি হয়ে যায়। জুনের শেষে অনেকে ধান রোয়াও শুরু করে দেন। কিন্তু এ বার বর্ষা দেরিতে আসায় চাষিরা বীজতলা তৈরি করতে পারেননি। আর বীজতলা তৈরি মার খাওয়ায় এ বছর ধান রোয়ার কাজটাও সে-ভাবে শুরু করা যায়নি।
শুধু বীজতলার ক্ষেত্রে সেচের জল দিয়েও কাজ চালানো যায় ঠিকই। কিন্তু ধান রোয়ার পরে বৃষ্টি না-হলেই নয়। কৃষিমন্ত্রী জানান, এ রাজ্যে অগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত ধান রোয়ার কাজ চলে। সেই সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে তেমন সমস্যা হবে না। সময়ের হিসেব করে চাষিরা যাতে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে পারেন, তার জন্যও রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার?
কৃষি দফতর জানিয়েছে, প্রতিটি জেলা ও ব্লকে পর্যাপ্ত বীজ, সার মজুত রয়েছে। ইতিমধ্যেই ছ’টি জেলার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে কৃষি দফতর। অন্যান্য জেলার অবস্থা পর্যালোচনার কাজও শুরু হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, পরিস্থিতি বিচার করে কৃষি সহায়কদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অফিসে বসে নয়, সরাসরি মাঠে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে থেকে চাষের কাজে সহায়তা করতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে কোথায় কী ধরনের ধান বা অন্য ফসল চাষ করতে হবে, তার পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব কৃষি সহায়কদেরই।
রাজ্যে এ বার চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ১৫৬ লক্ষ মেট্রিক টনেরও বেশি। কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী ২০১১-’১২ সালে এ রাজ্যে ১৪৬.০৫ লক্ষ মেট্রিক টন, ২০১২-’১৩ সালে ১৫০.২৪ লক্ষ মেট্রিক টন চাল উৎপন্ন হয়েছিল। ২০১৩-’১৪ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫৬.১৭ লক্ষ মেট্রিক টন চাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy