গরমে: গ্লুকোজ়-জলে তেষ্টা মেটাচ্ছে হরিণেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের প্রচারে বেরিয়ে প্রার্থীদের কেউ ভরসা রেখেছেন ওআরএস-এ। কেউ বা ঘন ঘন চুমুক দিচ্ছেন ডাবে। ভোট প্রার্থীদের মতো ‘ভিআইপি’ নয় ওরা। তবু তীব্র দাবদাহ থেকে রেহাই পেতে ওআরএস জুটছে ওদেরও।
এ গরমে বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যের পশুপাখিদের সুস্থ রাখতে নানা পদক্ষেপ করেছে বন দফতর। বন্যপ্রাণীদের তেষ্টার জলে গ্লুকোজ মিশিয়ে বানানো হচ্ছে ‘ওআরএস’। কোথাও আবার গাছের ডালে রেখে দেওয়া হয়েছে জল ভর্তি মাটির কলসি। শরীরে নুনের চাহিদা মেটাতে রাখা হয়েছে নুনের ঢেলা। পরিবর্তন আনা হয়েছে খাবারের মেনুতেও। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গরম এলে প্রতি বছর ওই অভয়ারণ্যের পশুদের জন্য নানা ব্যবস্থা করা হয়। এমনিতেই জঙ্গলের মধ্যে কয়েকটি পুকুর রয়েছে। গত বছরও দু’টি পুকুর কাটা হয়েছে। সকালে খাবারে সবুজ ঘাস ছাড়াও ভুসি, খোল, আখের গুড় ও ভিজে ছোলা দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে শরীরে নুনের চাহিদা মেটানোর জন্য নুনের ঢেলা দেওয়া হচ্ছে খাবারের সঙ্গে। তা চেটে চেটে খায় হরিণেরা। জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১২টি টিনের পাত্র রাখা হয়েছে। প্রতি দিন সকালে ৫০০ গ্রাম গ্লুকোজ জলে গুলে প্রতিটি পাত্রে ভাগ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাখিদের কথা মাথায় রেখে জল ভর্তি ২০টি মাটির কলসি গাছের ডালে ঝোলানো হয়েছে। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সেই জল পাল্টে দেওয়া হয়। কর্মীদের আশা, এতে কিছুটা হলেও রেহাই পাবে বনের পশুপাখিগুলি। এ ছাড়াও মার্চের শুরুতে কৃমি প্রতিরোধ করতে ও শরীরে ভিটামিন বাড়াতে হরিণগুলিকে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো ওষুধও খাওয়ানো হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গরমে মানুষ যেমন খাদ্যের পরিমাণ কমিয়ে দেয় তেমনই পশুপাখিদের মধ্যে খাবারের প্রতি অনীহা দেখা যায়। বছরেরে অন্য সময় যেখানে দিনে সবুজ ঘাস ৫০-৬০ কিলোগ্রাম লাগে, গরমে তা ৩০ কিলোগ্রামে নেমে আসে। মার্চ পড়তেই নতুন মেনু চালু হয়ে যায়। জুন পর্যন্ত সেই রুটিন মানা হয়। পুরো বিষয়টি দেখভাল করার জন্য ৪ জন কর্মী রয়েছেন। পর্যটকেরা যাতে প্রাণীদের উত্ত্যক্ত না করেন তার জন্য ৩ জন কর্মী খেয়াল রাখছেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষ জানান, এ গরমে প্রাণীদের সুস্থ রাখতে নিজেরা যেমন নানা পদক্ষেপ করেছেন, তেমনই লিফলেট বিলিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সচেতন করার চেষ্টা চলছে। পাখিদের যাতে জল খেতে অসুবিধা না হয় তার জন্য বাড়ির ছাদে বা খোলা জায়গায় পাত্রের মধ্যে জল রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিটি অফিসার মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘গরমে জীবজন্তু যাতে সুস্থ থাকে তার জন্য আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা চালাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy