দিনমজুরের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ কেশবপ্রসাদের (মাঝে)। — নিজস্ব চিত্র।
মাটির বাড়ি। টালির চাল। তিন জনের দিনমজুরির রোজগারে ছ’টা পেট কোনও রকমে চলে। সেই বাড়িতে হঠাৎ এলাহি আয়োজন।
বুধবার দুপুরে পোলবার সুলতানগাছার প্রদীপ বাউলদাসের ওই বাড়িতেই সপার্ষদ ভোজ সেরে গেলেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্য। সব মিলিয়ে প্রায় ৬৫ জনের খাবারের আয়োজন করতে ঘুম ছুটল দিন আনি দিন খাই পরিবারের। ঘরে কুড়িয়ে বাড়িয়ে যা ছিল, তাতে হয়নি। দেনা করতে হয়েছে।
দলীয় কর্মসূচিতে এ দিন পোলবায় আসেন কেশবপ্রসাদ। মহানাদ বাজারে পদযাত্রা করেন। জটেশ্বর মন্দির এবং ব্রহ্মময়ী কালীবাড়িতে পুজো দেন। সুলতানগাছার পাঁচটি বাড়ি থেকে চাল-আলুও সংগ্রহ করেন। এরপর বেলা দু’টো নাগাদ হুটার বাজিয়ে প্রদীপের বাড়ির সামনে থামে তাঁর ২০-২৫টি গাড়ির কনভয়।
ভাত, রুটি, পালংশাক, লাউশাক, মুগ ডাল, বেগুন ভাজা, সজনে ফুল ভাজা, আলুপোস্ত, ফুলকপির তরকারি, টোম্যাটোর চাটনি, পাঁপড়, রসগোল্লা মাটির থালায় সাজিয়ে দেয় বাউলদাস পরিবার। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে ছিলেন দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য নেতারা। মন্ত্রী-সহ চার জন খেতে বসেন ঘরের দাওয়ায়। অন্যদের জন্য উঠোনে চেয়ার-টেবিল পাতা হয়েছিল। গ্রামের দুই রাঁধুনি রান্না করেন।
পোলবায় কেশবপ্রসাদ মৌর্যের যাত্রা। —নিজস্ব চিত্র।
বাবা-মা, স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে প্রদীপের সংসার। তিনি জানান, সোমবার বিজেপির তরফে তাঁকে মন্ত্রীর খাওয়ার কথা জানানো হয়। কাজ ফেলে তোড়জোড় শুরু করেন তাঁরা। চাল-ডাল, আনাজ থেকে মাটির থালা-গ্লাস কেনা, চেয়ার-টেবিল থেকে রাঁধুনি ভাড়া— সবই করতে হয়েছে দু’দিনে। আয়োজনে বেরিয়ে গিয়েছে সাত-আট হাজার টাকা। এখনও মুদি দোকানের হিসেব আসেনি। ডেকরেটরের ভাড়া, রাঁধুনির মজুরিও বাকি। প্রদীপ বলেন, ‘‘অতিথি বলে কথা। ঘরে যেটুকু ছিল দিয়েছি। বাকিটা ধার করতে হয়েছে। বাকি খরচও দেনা করেই মেটাতে হবে। তবে, সব টাকাই দিয়ে দেওয়া হবে বলা হয়েছে। তবে, এখনও পাইনি। আমি, স্ত্রী এবং মা দিনমজুরি করি। কষ্টে সংসার চলে। আয়োজনের জন্য দু’দিন কাজে যেতে পারিনি।’’
জেলার বিজেপি নেতা গৌতম বলেন, ‘‘আয়োজনের বিষয়টি দলের স্থানীয় নেতৃত্ব দেখেছেন। খরচের বিষয়টি ওঁদের থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে। উনি (প্রদীপ) টাকা না পেলে তার ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করে দেব। সমস্যা হবে না।’’
প্রদীপের আক্ষেপ, বর্ষার ঘরে জল ঢোকে। তিনি বিজেপি সমর্থক বলে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পে ঘর পাননি বলেও তাঁর অভিযোগ। এ দিন মন্ত্রীকে ঘরের কথা বলবেন বলে ভেবেছিলেন। তবে, সে সুযোগ জোটেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy