ছবি: সংগৃহীত।
ঘূর্ণিঝড় এলে কাজের চাপ কেমন বাড়ে, তা গত বছরই টের পেয়েছিলেন সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া হাওয়া অফিসের কয়েক জন তরুণ বিজ্ঞানী। তাঁদের মধ্যে এক জন তো নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রায় তিন দিন ওড়িশার গোপালপুরের হাওয়া অফিসে পড়েছিলেন! ঝড় পেরিয়ে যাওয়ার পরে বড় কর্তাদের প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ বার তো যেন ঘরে-বাইরে যুদ্ধ চলছে!
এক দিকে আণুবীক্ষণিক ভাইরাস, অন্য দিকে ধেয়ে আসছে সাগরের হামলাবাজ! এই দুইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে টানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে আবহাওয়া দফতরের এক-একটি দলকে। সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ অফিসে ঢুকেছিলেন আলিপুর হাওয়া অফিসের এক দল কর্মী। আমপানের উপরে নিরন্তর নজরদারি চালিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ছুটি পেয়েছেন তাঁরা। এ দিন বেলা ১১টায় যাঁরা কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁদের আজ, বুধবার ছুটি পাওয়ার কথা। কিন্তু আমপানের হামলার দিনে তাঁরা ছুটি নেবেন কি না, বলা সম্ভব নয়। পুলিশ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মতো আবহাওয়া দফতরও জরুরি পরিষেবা। তাই বছরের কোনও দিনই দফতর বন্ধ হয় না। হাওয়া অফিসের খবর, লকডাউন পর্বে এত দিন প্রতি শিফটে ৬ জন করে থাকতেন। কিন্তু ঘুর্ণিঝড়ের আবহে ২৪ ঘণ্টার শিফট ভাগ করে ১২ জন কর্মী থাকছেন। অফিস-বাড়ি করে দিনরাত কাজ করছেন পদস্থ বিজ্ঞানীরাও। হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস যেমন, গত দু’দিন রাতে মেরেকেটে ঘণ্টা তিনেক ঘুমিয়েছেন। একই পরিস্থিতি দফতরের শীর্ষকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল)সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, আবহাওয়া অফিসের মূল ভিত অবজ়ার্ভাররা। এই পদের কর্মীরাই নিরন্তর নজরদারি করেন, তথ্য সংগ্রহ করেন। তার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাস দেন বিজ্ঞানীরা। শুধু আলিপুর হাওয়া অফিস, দিঘা, পারাদ্বীপ-সহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় যে সব অবজ়ারভেটরি রয়েছেন সেখানের কর্মীরাও সমান নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন।
আরও পড়ুন: আটকে পড়াদের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থার দাবি
আরও পড়ুন: পরিযায়ীদের ফেরাতে ভিন্ রাজ্য পিছু নোডাল অফিসার
মৌসম ভবনের খবর, লকডাউনে পণ্যবাহী বিমান চলছে। তাই ছুটি নেই বিমানবন্দরের হাওয়া অফিসগুলিতেও। তার উপরে ঘূর্ণিঝড় আসায় বিমানচলাচল সংক্রান্ত আবহকর্মীরাও নিরন্তর পরিশ্রম করছেন। সঞ্জীববাবু কৃতিত্ব দিয়েছেন দফতরের মোটরযান বিভাগের কর্মী, চালক এবং সাফাইকর্মীদেরও। কঠিন পরিস্থিতিতে সময়ে সবাইকে অফিসে পৌঁছনো এবং বাড়ি ফেরানোর দায়িত্ব মোটরযান বিভাগের কর্মীদের। এর পাশাপাশি বারবার বিরাট দফতরকে জীবাণুমুক্ত রাখতে খেটে চলেছেন সাফাইকর্মীরাও। হাওয়া অফিসের কর্তারা বলছেন, কোনও এক জনের পক্ষে আবহাওয়া বিভাগ চালানো সম্ভব। সর্বস্তরের কর্মীরা দলবদ্ধ ভাবে কাজ করেছেন বলেই করোনা পরিস্থিতিতেও ঘূর্ণিঝড়ের নিখুঁত পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy