Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

হাওড়া, কলকাতা সচল হতেই শিকেয় দূরত্ব বিধি, বাড়ছে করোনা শঙ্কা

আমপানের ঝাপটা কাটিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে কলকাতা ও হাওড়া। কিন্তু করোনা নিয়ে সতর্কতার অভাব চোখে পড়েছে প্রায় সর্বত্র।

আমপানের পর ভিড় বেড়েছে রাস্তাঘাটে। ছবি- পিটিআই।

আমপানের পর ভিড় বেড়েছে রাস্তাঘাটে। ছবি- পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ১২:২৯
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় আমপানের (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) ক্ষয়ক্ষতি সামলে সোমবার অনেকটা সচল হয়েছিল কলকাতা ও হাওড়া। আর সেই সুযোগে লকডাউন শিকেয় তুলে, দূরত্ব-বিধির পরোয়া না-করে মানুষের ঢল নামল রাস্তায়। চলল যানবাহন। খুলে গেল অধিকাংশ দোকান। জোন বিভাজন ভুলে কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জোনেও বাজার বসল যত্রতত্র। স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, এর ফলে এই সব এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে।

কলকাতাতে রয়েছে মোট ২৮৬টি কন্টেনমেন্ট জোন। সেই সব এলাকাতেও সোমবার খুলে গিয়েছে অনেক দোকানপাট। যার জেরে ভিড় এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। উত্তর কলকাতার রবীন্দ্র সরণি, রাধাকান্ত দেব লেন, বিপিন বিহারি স্ট্রিট, রাজা মনীন্দ্র রোড, শোভাবাজার স্ট্রিট, রবীন্দ্র সরণির মতো এলাকা কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় রয়েছে। কিন্তু সেখানেও প্রচুর মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে গত দু’দিনে। গাড়ির উপস্থিতি এই এলাকার রাস্তায় যেমন বেড়েছে, তেমন বেড়েছে বাজারে ভিড়। দোকানও অনেক বেশি খুলতে দেখা গিয়েছে এই সব এলাকায়। একই ছবি বেলঘাটা মেন রোড, নারকেলডাঙা মেন রোড, আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায়।

বাকি কলকাতার ছবিও খুব আলাদা নয়। যেমন, হরিদেবপুর থানা এলাকার দাসপাড়া, জেমস লং সরণি ও এসপি নগর। কন্টেনমেন্ট এলাকায় দোকানপাট খুলে যাওয়ায় বাজারে যেমন বেড়েছে মানুষের ভিড়। তেমনই রাস্তাঘাটেও মানুষের উপস্থিতি অনেকটাই চোখে পড়েছে। পার্ক স্ট্রিট, কড়েয়া, বন্ডেল রোড, কুষ্ঠিয়া রোড, তিলজলা, শিবতলা লেন, পিকনিক গার্ডেন, চক্রবেড়িয়া রোড, খিদিরপুর কমিশনারেট রোড, একবালপুর, আলিপুর রো়ড, টালিগঞ্জ, চারু মার্কেট রয়েছে কন্টেনমেন্ট জোনে। সেখানেও দূরত্ব বিধির তোয়াক্কা না করেই দোকান বাজারে মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়েছে।

রবিবার রাত থেকেই হাওড়া শহরের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এ দিন সিইএসসি-র তরফে জানানো হয়, শহরের বাইরে কয়েকটি জায়গা ছাড়া হাওড়া পুর এলাকার প্রায় সর্বত্র পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। অন্য দিকে, রবিবার রাতের মধ্যে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পাঁচটি পাম্প কাজ শুরু করায় শহরে জলের সঙ্কটও অনেকটা মিটে যায়। এক পুরকর্তা জানান, সঙ্কট অনেকটাই মিটেছে। অধিকাংশ ওয়ার্ডেই স্বাভাবিক হয়েছে জল সরবরাহ।

কিন্তু এই স্বাভাবিকতার মধ্যেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। কারণ, এ দিন সকাল থেকে হাওড়ার বড় রাস্তা এবং গলিতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। দোকানপাট সব খুলে যায়। বাজারগুলি এখনও বন্ধ থাকলেও রাস্তার ধারে এবং অলিগলিতে অস্থায়ী বাজার বসে পড়ে। দূরত্ব-বিধি না-মেনে বাজার করতে নেমে পড়েন বাসিন্দারা। এই অবস্থা দেখা যায় কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জোন হিসেবে চিহ্নিত ডবসন রোড, পিলখানা, বেলিলিয়াস রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, জি টি রোড, ফজিরবাজার-সহ বহু এলাকায়।

আরও পড়ুন: কোথায় বিদ্যুৎ? বিক্ষোভ চলছে, সিইএসসি-কে দুষলেন ফিরহাদ

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুর এলাকায় মোট ৩৪টি ওয়ার্ডের ৮৮টি রাস্তাকে কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ওই এলাকাগুলিতে কঠোর ভাবে লকডাউন বলবৎ হবে। বন্ধ থাকবে সব দোকান। কিন্তু সরকারি সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এ দিন লকডাউনের আগের অবস্থায় ফিরে আসে হাওড়া। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে ভাবে মানুষজন বেরিয়ে পড়েছেন, তাতে অনিবার্য ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো হাওড়ায় নেই।’’

কিন্তু এ ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা কী? হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জোন হিসেবে চিহ্নিত জায়গাগুলি গার্ডরেল ও দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর পরেও যদি মানুষ রাস্তায় বেরোন, আমরা কতটা আটকাতে পারি? তবে সবাইকে বোঝানো হচ্ছে, লকডাউন চলছে। বেরোবেন না। কিন্তু মানুষ আর শুনছেন না।’’

আরও পড়ুন: উচ্চচাপের ঠেলাতেই দক্ষিণবঙ্গে আছড়াল আমপান, বলছেন আবহবিদরা

এর পাশাপাশি মাস্ক পরার প্রবণতাতেও ভাটা পড়েছে বেশ কিছু এলাকায়। জল-বিদ্যুতের দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করতে নামা অনেকের মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক। উল্টে এই সব বিক্ষোভের জেরে ভিড় বেড়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Coronavirus Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy