ফাইল চিত্র
আপত্তি উঠেছে শিক্ষা শিবিরের বিভিন্ন স্তরে। অসুবিধা কোথায়, ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভাবে জানানো হয়েছে তা-ও। এ বার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের বৈঠকে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হল, দেশ জুড়ে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার (সিইউইটি) মাধ্যমে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। কোন কোন যুক্তিতে সেটা বাস্তবোচিত নয়, শুক্রবার ইউজিসি-র চেয়ারম্যান জগদেশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকে তা ব্যাখ্যা করা হয় এবং অন্যতম যুক্তি হিসেবে ওঠে ভারতের বৈচিত্রের কথা।
রাজ্য সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউজিসি-প্রধানের এ দিনের অনলাইন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতার জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও। শিক্ষা সূত্রের খবর, জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বদল আসবে বলে যুক্তি দেখান জগদেশ। প্রস্তাবিত অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার পাশাপাশি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’টি পাঠ্যক্রমে পড়ুয়াদের ভর্তির সুযোগ নিয়েও আলোচনা হয়। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিবাজীপ্রতিম বসু জানান, ভারতের মতো বিশাল দেশে সব বোর্ড এবং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম এক রকম নয়। তাই সর্বত্র স্নাতক স্তরে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া বাস্তবসম্মত নয়।
রাজ্য বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইউজিসি-র চেয়ারম্যানকে জানান, কোনও নীতি বাস্তবায়িত করার আগে যেন প্রতিটি রাজ্য এবং প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতা, তার বৈচিত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের একই সঙ্গে দু’টি পাঠ্যক্রমে পড়ার সুযোগের ব্যাপারে সোমাদেবীর বক্তব্য, তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর শিক্ষকের। যা বাস্তবে নেই। বৈঠকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের প্রস্তাব, ‘উন্নত’ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি একই অঞ্চলের তুলনায় ‘অনুন্নত’ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের দিকে হাত বাড়িয়ে দিক।
প্রস্তাবিত জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাত চলছে বহু দিন ধরেই। ওই নীতি ‘চাপিয়ে দেওয়া’র চেষ্টার পাশাপাশি এর মাধ্যমে শিক্ষার গেরুয়াকরণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্বতা ও স্বাধিকার হরণের অভিযোগ উঠছে। একই ভাবে অভিযোগ উঠছে, রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না-করেই অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে রাজ্যের অধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও ভর্তি নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইউজিসি। একতরফা কেন্দ্রের নির্দেশ না-মেনে প্রস্তাবিত জাতীয় শিক্ষানীতি, অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার মতো বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে এবং রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরির লক্ষ্যে দশ সদস্যের কমিটি একটি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আগামী সপ্তাহে সেই কমিটির প্রথম বৈঠকে বসার কথা। জাতীয় শিক্ষানীতি ছাড়াও মহারাষ্ট্র, কেরল-সহ বিভিন্ন রাজ্য যে-শিক্ষানীতি তৈরি করছে, তা খতিয়ে দেখবে কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy