ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নে দুর্নীতির ছায়া স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরে ক্রমেই প্রলম্বিত হচ্ছে সিএসসি বা রাজ্যের কলেজ সার্ভিস কমিশনেরও উপরেও।
প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে কলেজ-শিক্ষক পদে তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া খোলা চিঠিতে সে ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। সেই সঙ্গে, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠের অভিযোগের আঙুল সরাসরিই উঠেছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমান শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অন্যতম ‘ঘনিষ্ঠ’ এক কলেজ শিক্ষিকার দিকেও।
২০১৮ সালে সিএসসি’র প্রকাশিত তালিকায় তাঁদের নাম থাকলেও চাকরি এখনও অধরা ওই প্রার্থীদের। দিন দুয়েক আগে কলেজ-শিক্ষক পদের ওই চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ খোলা চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে। বুধবার, তাঁরা স্মারকলিপি জমা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা সচিবের কাছেও। বিকাশ ভবনে জমা দেওয়া ওই স্মারকলিপির সঙ্গে জমা পড়েছে ১০৯ পৃষ্ঠার নিয়োগ সংক্রান্ত বেনিয়মের একাধিক তথ্যও। তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, যোগ্যতা সত্ত্বেও চাকরির শিকে তাঁদের ভাগ্যে না ছিঁড়লেও ইতিমধ্যেই ১২২ জন ‘অন্য পথে’ কলেজ শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছেন। এবং এই দুর্নীতির পিছনে অন্যতম ‘নাটের গুরু’ হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেছেন পার্থ-ঘনিষ্ঠ কলেজ শিক্ষক মোনালিসা দাসের নাম। তাঁদের অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে মোনালিসা কম যোগ্যতাসম্পন্ন অনেকের নিয়োগ সুনিশ্চিত করেছেন। মোনালিসা অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ব্যস্ত আছি।’’
সিএসসি’র পক্ষ থেকেও সব অভিযোগই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক কর বলেন, ‘‘গত ১০ বছরে কলেজ সার্ভিস কমিশন স্বচ্ছতার সঙ্গে ৭,৭৫০ জনকে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে নিয়োগ করেছে।’’ এ দিন তাঁদের স্মারকলিপিতে কলেজ-শিক্ষক পদের চাকরিপ্রার্থীরা অবশ্য নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি সিএসসি’র চেয়ারম্যান দীপক কর এবং মোনালিসা দাস’কেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মোনাসিলা কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা। তাঁর আদি বাড়ি রানাঘাটের কাছে পায়রাডাঙায়। এ দিন তাঁর দাদা মানস দাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে প্রায়ই বাংলাদেশ যাওয়ার সুবাদে সে দেশের বেশ কয়েক জনের সঙ্গে মোনালিসার সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সেখানে বা এখানে জমি কেনা বা অন্যান্য যা বলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। বোন পার্থ চট্টোপাধ্যেয়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করত।” চাকরিপ্রার্থী ক্ষুদিরাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলের মতো কলেজেও নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনও নিয়মই মানা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy