নিহত জওয়ান রাজীবের শোকগ্রস্ত পরিবার। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
কী এমন ঘটল যাতে নিজেদের ক্যাম্পেই সহকর্মীর গুলিতে প্রাণ দিতে হল তরতাজা এক জওয়ানকে।
এই প্রশ্নই সারা দিন পাক খেল দেবগ্রাম স্টেশনপাড়ায়।
সোমবার সকালে সিআরপি-র পক্ষ থেকে রাজীব মণ্ডলের (৩২) মৃত্যুর খবর জানানোর পরে পরিজনেরা প্রথমে ভেবেছিলেন, মাওবাদী হামলা হয়েছে। কেননা ছত্তীসগঢ়ের সুকমায় যে ক্যাম্পে রাজীব ডিউটি করছিলেন, তা মাওবাদী এলাকার মধ্যেই পড়ে। পরে স্পষ্ট হয়, সে সব নয়। ক্যাম্পে এক জওয়ানেরই ছোড়া গুলিতে সাত জন হতাহত হয়েছেন।
দেবগ্রাম বিবেকানন্দ স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে এসএ বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন রাজীব। ২০১০ সালে শিলিগুড়িতে সিআরপি-র কাজে যোগ দেন। মাস তিন-চার আগে সুকমার মারাইগুড়া গ্রামের ক্যাম্পে এসেছিলেন। এক মাসের ছুটি কাটয়ে গত ৮ অক্টোবর সেখানে ফিরে যান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছোট থেকেই খেলাপাগল রাজীব ছিলেন মিশুকে স্বভাবের। ছুটিতে এলে বাড়ির আর এলাকার বাচ্চাদের নিয়ে মেতে থাকতেন। ফোনে ভিডিয়ো তৈরি করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার শখ থিল তাঁর। বছর নয় আগে নাকাশিপাড়ার হরনগরের মেয়ে সুলেখা মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ছয় ও দু’বছরের দু’টি মেয়েও রয়েছে তাঁদের।
সোমবার বিকেল পর্যন্ত সুলেখা বুঝে উঠতে পারেননি, কী ভাবে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হল। বসে খালি কেঁদে গিয়েছেন। রাজীবের মা হানিফা বিবিও বলছেন, “আমার ছেলেকে কেন মরতে হল, তা কিন্তু আমাদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয়।” রাজীবের পিসির ছেলে ফারুক শেখের প্রশ্ন, “সিআরপি অফিসারেরা কিছুই খুলে বলছেন না কেন?” ওই এলাকারই বাসিন্দা তথা কালীগঞ্জ ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি কাজল শেখ বলেন, “রাজীবের এ ভাবে মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। ওর মতো মিশুকে ছেলের কেন কোনও সহকর্মীর সঙ্গে ঝামেলা হবে, তা বুঝছি না। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে তার পরিবারকে সব জানানো হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy