Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Ayush Hospital

কেন্দ্রের সাহায্যে তৈরি দুই হাসপাতালে চিকিৎসা সঙ্কট

এই দু’টি হাসপাতালে রোগী ভর্তি রেখে আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার কথা।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১৯
Share: Save:

রাজ্যের দু’টি ‘ইন্টিগ্রেটেড আয়ুষ হাসপাতাল’-এর মধ্যে দু’টিতেই চিকিৎসা পরিষেবা থমকে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ অর্থ সাহায্যে (৬০ শতাংশ কেন্দ্রের, ৪০ শতাংশ রাজ্যের) এই দু’টি আয়ুষ হাসপাতাল রয়েছে। একটি পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহরের উপান্তে কুইকোঠায় ও অন্যটি আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকে তপসিখাতায়। দু’টি হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়তে কেন্দ্র মোট ১৮ কোটি টাকা দিয়েছে। এই দু’টি হাসপাতালে রোগী ভর্তি রেখে আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার কথা।

মেদিনীপুরের হাসপাতালটি তৈরি হয়েছে ২০১৯ সালে। সেটিতে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরুর আগেই সেটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছিল। এখন সেটিকে কোভিডের পরিষেবা বন্ধ থাকলেও সাধারণ আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও শুরু হচ্ছে না। আলিপুরদুয়ারের হাসপাতালটি ২০১৭ সালে তৈরি হয়। সেখানে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। কিন্তু, সেটিকেও কোভিডের জন্য ব্যবহার করার পরে এখন সাধারণ চিকিৎসা বন্ধ।

বিজেপির অভিযোগ, ৬০ শতাংশ অর্থ কেন্দ্র দেওয়ায় এবং দু’টি হাসপাতালই বিজেপির দুই সাংসদের এলাকার মধ্যে হওয়ার জন্য এগুলি চালাতে দিচ্ছে না রাজ্য। এখানে ডাক্তার, নার্স ও অন্য কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের হাসপাতালটি রয়েছে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের এলাকায় এবং আলিপুরদুয়ারের হাসপাতালটি বিজেপি সাংসদ জন বার্লার এলাকায়। দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘আমার এলাকায় আয়ুষ হাসপাতাল চালু করার ব্যাপারে কোনও ভাবে রাজ্যের সাহায্য পাচ্ছি না। হতে পারে ওরা এটা করতে চাইছে না। অনেক বার বলেছি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে জানাব। সব রকম পরিকাঠামো যুক্ত আয়ুষ হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তার পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’’

জন বার্লার কথায়, ‘‘যে জায়গায় জন প্রতিনিধি বিজেপির বা বিজেপি সমর্থকদের আধিক্য সেখানে তৃণমূল সরকার কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হতে দেবে না। আমার সাংসদ তহবিলের টাকা ওরা উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করতে দিচ্ছে না। আমার এলাকার এত ভাল আয়ুষ হাসপাতালও চালু করতে দিচ্ছে না।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, সামনে ভোট বলে বিভিন্ন অজুহাতে হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ‘ন্যাশনাল আয়ুর্বেদ স্টুডেন্টস অ্যান্ড ইউথ অ্যাসোসিয়েশন’ (নস্য) রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে গত ৬ জানুয়ারি চিঠি দিয়েছে। এর আগে তারা চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে কেন্দ্রের আয়ুষ মন্ত্রকেও।

যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি রাজ্য। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের বক্তব্য, ‘‘কোভিডের সময় হাসপাতালগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল। এখন সেখানে কিছু কাজ চলছে, তাই বন্ধ আছে। আবার আমরা নিশ্চয়ই সেগুলি চালু করব।’’ যদিও পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলের কথায়, ‘‘আয়ুষ হাসপাতালটি এখন বন্ধ কেন আমরা বলতে পারব না। এটা দফতরের সিদ্ধান্ত। আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে, পরিকাঠামো একদম তৈরি।’’

আলিপুরদুয়ারের ৫০ শয্যার আয়ুষ হাসপাতাল ২০১৭ সালে খোদ মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেছিলেন। সেখানে গত বছর কোভিডের চিকিৎসা হয়। এখন সেখানে কোনও কোভিড রোগী নেই। গোটা আলিপুরদুয়ারেই এখন নথিভুক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা মাত্র ৩০, তাঁরাও উপসর্গবিহীন। অথচ, এখনও ওই আয়ুষ হাসপাতালে স্বাভাবিক পরিষেবা চালু করা হচ্ছে না। ওই হাসপাতাল থেকে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে রাজ্য সরকারের প্রকল্প ‘কর্মতীর্থ’-এর একটি দোকানের মধ্যে কোনওরকমে শুধু আউটডোরটুকু হচ্ছে।

সেখানকার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশ বেরার কথায়, ‘‘আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা, বীরপাড়া হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, নার্সদের কোভিডের পরিষেবার জন্য এখানে আনা হয়েছিল। তাঁদের এখন কোনও কাজ নেই। অথচ কোনও নির্দেশ আসেনি বলে তাঁদের নিজের নিজের হাসপাতালে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না। কোভিড রোগী না থাকায় হাসপাতালের ৫২ জন কর্মীর কার্যত কোনও কাজ নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors Ayush Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy