পুলিশ কমিশনারের অপসারণের দাবিতে বামেদের ‘লালবাজার অভিযান’-এর মিছিল গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
সিপিএমের ডাকা লালবাজার অভিযানকে ঘিরে উত্তপ্ত হল ধর্মতলা এলাকা। লালবাজারের পথে বিশাল ব্যারিকেড করে মিছিল আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তবে অন্য রাস্তা দিয়ে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে পৌঁছে নগরপালের অপসারণের দাবি সংবলিত পোস্টার সাঁটতে গিয়েছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানে ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হলেও সিপিএম হুঁশিয়ারি দিয়েছে, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নগরপাল বিনীত গোয়েল পদ থেকে না-সরলে লালবাজারে টানা ধর্না-অবস্থান চালাবে তারা।
ধর্মতলায় জমায়েত করে সোমবার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও গণেশ অ্যাভিনিউ ধরে এগিয়েছিল সিপিএমের মিছিল। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে বড় ব্যারিকেড করে মিছিল আটকে দিয়েছিল পুলিশ। সেখানেই ম্যাটাডোর-মঞ্চে হয়েছে বিক্ষোভ-সভা চলছে। নগরপালের অপসারণ এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মুখ্যসচিবকে লেখা সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারের লেখা চিঠি পড়ে শোনানো হয় সেখানে। তার মধ্যেই লালবাজারে ১৪ জনের গ্রেফতার হওয়ার খবর আসে। ওই ১৪ জনের মুক্তির দাবিতে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে ব্যারিকেডের সামনেই অবস্থান চালিয়েছেন সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা। অভিযানে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, প্রমুখ। অস্থায়ী-মঞ্চে সেলিম বলেছেন, ‘‘অপরাধকে শেষ করার বদলে অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বিনীত গোয়েলকে বলির পাঁঠা করেছেন, আমরা বলছি নগরপালকে পদ ছাড়তে হবে।’’
দাবিপূরণ না-হলে ১৪ তারিখ থেকে লাগাতার ধর্নার ডাকও দিয়েছেন সেলিম। প্রসঙ্গত, বামফ্রন্টের ডাকে ১৩ তারিখ আবার লালবাজার অভিযান হওয়ার কথা। পুলিশ ১৪ জনকে ছেড়ে দেওয়ার পরে সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও জানিয়ছেন, লড়াই জারি থাকবে। অস্থায়ী-মঞ্চেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছেন। দম ধরে রাখতে হবে, ৯ ফুটের ব্যারিকেড থাকতে পারে, কিন্তু লড়াই চলবে।’’ পুলিশের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যদি কোনও রাজনৈতিক দলের চাকরগিরি করতে চান, তা হলে মানুষের ব্যারিকেড হবে! শিরদাঁড়া ঠিক করুন আর নিরপেক্ষতার সঙ্গে রাজ্যে শান্তি সুরক্ষা বজায় রাখুন। রাজ্য জুড়ে এই আন্দোলন চলবে।’’
আর জি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে এ দিন ডিসি (উত্তর) দফতর অভিযান করেছে বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলা। বিজেপি নেতা তাপস রায়, জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ ও পুর-প্রতিনিধি সজল ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল করে ডিসি-র দফতরের দিকে এগোতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। মানিকতলার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড গড়ে মিছিল আটকায়। বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন। বিকেলে সিমলা স্ট্রিটে বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে মশাল নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এবিভিপি-র সদস্যেরা।
ন্যায়-বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই বলে জানিয়েছে ছাত্র পরিষদও। বিচারের দাবিতে এ দিন কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগর মূর্তির সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ ছিল ছাত্র পরিষদের। সেখান থেকেই রাজ্যের নানা জায়গায় বৃহত্তর আন্দোলন তৈরির বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব। অবস্থানে ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার, অমিতাভ চক্রবর্তী, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, মানস সরকার-সহ অন্যেরা। আর জি করের ঘটনায় বিচারের দাবি এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রতিবাদে আরও আন্দোলন হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy