সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে একে অপরকে দায়ী করে তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজের দাবিকে হাতিয়ার করেই মেরুকরণের রাজনীতির মোকাবিলা করতে চাইছে সিপিএম। ‘দুষ্কৃতী ও দুর্নীতির তন্ত্র’ থেকে মুক্তি পেতে মানুষকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পথে নামতে চলেছে তারা।
সিপিএম সূত্রের খবর, স্বচ্ছ নিয়োগের দাবি এবং দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য স্তরে বড় আকারে পদযাত্রা বা মিছিলের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ওই কর্মসূচি থেকেই অশান্তি, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের প্রতিবাদও জানানো হবে। বিভিন্ন বাম দলের সঙ্গে এই কর্মসূচির বিষয়ে কথা বলবেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। কথা বলা হতে পারে কংগ্রেসের সঙ্গেও। তার আগে কলকাতায় দ্রুত পথে নামার জন্য আগামী ৮ এপ্রিল কর্মসূচি নিচ্ছে কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট। সে দিন পার্ক সার্কাস থেকে ধর্মতলা মিছিল হবে বিজেপি ও তৃণমূলের রাজনীতির বিরোধিতা করে।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুধবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে হাওড়ার শিবপুর, হুগলির রিষড়ায় সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে আলোচনা হয়েছে যে, রাজ্যে দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতী-রাজের বিরুদ্ধে, সরকারের কাছে নানা দাবি নিয়ে বিভিন্ন অংশের আন্দোলন গতি পেয়েছে। এই আন্দোলনের জমিতে বিজেপি তেমন ভাবে দাগ কাটতে পারেনি। সাগরদিঘির বিধানসভা উপনির্বাচন এবং একাধিক জেলায় সমবায়-সহ বিভিন্ন স্থানীয় সমিতির নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে তৃতীয় বিকল্প মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। এই অবস্থায় বিভাজনের রাজনীতিতে ভাগাভাগির গল্প এনে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল ফের মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছে বলে সিপিএমের মত। একই অভিমত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বেরও। সূত্রের খবর, সিপিএমের বৈঠকে এই কথাও এসেছে যে, কোথাও ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে শান্তি মিছিল করতে গেলেও পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া দুষ্কর। ঘটনার পরে মাঠে না নেমে তার চেয়ে আগে ‘সক্রিয়’ হয়ে ময়দানে থাকাই ভাল। সেই সূত্রেই পথে নামার পরিকল্পনা।
কোনও ঘটনায় আদালত কী নির্দেশ দিচ্ছে, তার চেয়েও অশান্তি বন্ধে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা যে অনেক বেশি জরুরি, সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, নয়ের দশকে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিলে পুলিশের আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে সব রাজ্যে সংঘর্ষ দমনে বিশেষ গাড়ি ও সরঞ্জাম কেনা হয়, সংঘর্ষ মোকাবিলার বাহিনী ইত্যাদি তৈরি হয়। সাম্প্রতিক কালে বিরোধী দলের যত নবান্ন অভিযান হয়েছে, তার মোকাবিলায় রোবোকপ-সহ নানা সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু হাওড়া, রিষড়ার মতো ঘটনায় যথাসময়ে সেগুলো ব্যবহার করা হয়নি কেন? সেলিমের মন্তব্য, ‘‘এ রাজ্যের মানুষ যখন দুষ্কৃতী ও দুর্নীতির তন্ত্র থেকে মুক্তি পেতে জোটবদ্ধ হচ্ছেন, তখন তৃণমূল এবং বিজেপি আবার মানুষকে ভাগ করতে চাইছে। মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। তিনটে ‘সি’র (করাপশন, ক্রিমিনালাইজেশন, কমিউনালাইজেশন) বিরুদ্ধে মানুষকে একজোট করে লড়াই করতে হবে।’’ ভাঙড় ও ক্যানিংয়ে দলের জোড়া কর্মসূচিতে আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীও এ দিন বলেছেন, দুর্নীতি-সহ নানা ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে অশান্তি বাধানো হচ্ছে। স্থানীয় স্তরে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইএসএফ কর্মীদের গণতান্ত্রিক পথেই এই কৌশল প্রতিহত করার ডাক দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy