নিজেদের প্রচার আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে এবং প্রতিপক্ষের প্রচারের জবাব দিতে সোশ্যাল মিডিয়াকে কার্যকরী ভাবে ব্যবহার করার উপযুক্ত কৌশলই নিতে হবে। ব্যক্তির প্রচার এখানে একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়।’’
প্রতীকী ছবি।
রাজনীতির ময়দানে সামাজিক মাধ্যম এখন বড় হাতিয়ার। সেই হাতিয়ার ব্যবহারেই সাবধানী হওয়ার সতর্ক-বার্তা জারি হল সিপিএমে।
সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য সম্মেলন থেকে যে ‘আহ্বান’ গৃহীত হয়েছে, সেখানেই সামাজিক মাধ্যমকে আরও কার্যকরী ভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যক্তি প্রচার বা দলীয় বিবাদ প্রকাশ্যে আনার মঞ্চ হিসেবে কাজে না লাগানোর জন্য সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে দলের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে দলের তরফে ‘প্রত্যক্ষ নজরদারি’র কথাও।
সময়ের চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে সিপিএমে এখন কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও জেলা স্তরে সামাজিক মাধ্যমের কাজ করার টিম আছে। যে যেমন খুশি পোস্ট করে দেবেন, এমন স্বাধীনতা দলের নেতাদের নেই। নির্দিষ্ট বিষয়ে নির্দিষ্ট নেতৃত্বের মতামত দেওয়ার রূপরেখা ঠিক করা আছে। বাকিরা উচ্চতর বা অন্য নেতাদের ওই মত ‘শেয়ার’ করতে পারেন। কিন্তু তার পরেও দলের ভিতরের বিতর্ক বা কোনও ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির বিরোধ সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে প্রকাশ্যে এসে গিয়ে সিপিএমের বিড়ম্বনা বেড়েছে নানা ক্ষেত্রে। তার প্রেক্ষিতেই ‘প্রত্যক্ষ নজরদারি’র কথা বলে প্রকৃতপক্ষে হোয়াট্সঅ্যাপ, ফেসবুক-সহ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকার বার্তাই দেওয়া হয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা।
সিপিএমের ২৬তম রাজ্য সম্মেলনে উঠে এসেছে ১২ দফা ‘আহ্বান’। সম্মেলনের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রতিবেদনে সেই এক ডজন আহ্বানের দশম অংশটি সামাজিক মাধ্যম সংক্রান্ত। সেখানে বলা হয়েছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যধারাকে আরও সুসংহত করতে হবে। পার্টির প্রত্যক্ষ নজরদারিতে পরিকল্পনার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যধারাকে অগ্রসর করতে হবে। রাজ্য ও জেলা কমিটিগুলির সোশ্যাল মিডিয়া কার্যধারার মধ্যে যথাযথ সমন্বয় প্রয়োজন।’ এই সঙ্গেই রয়েছে সতর্ক-বার্তা: ‘ব্যক্তি প্রচার কঠোর ভাবে বন্ধ করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যধারার সৃজনশীলতার যে সুযোগগুলি রয়েছে, তার ব্যবহারের সম্পূর্ণ সুযোগ সুনিশ্চিত করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার মঞ্চকে কোনও স্তরেই আন্তঃ-পার্টি সংগ্রামের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না’। প্রসঙ্গত, কোনও নীতি বা কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে বা কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে ভিন্ন মত থাকলে দলের মধ্যেই বিতর্কের বরাবর পক্ষপাতী কমিউনিস্ট পার্টি। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের অতিরিক্ত অভ্যাস সেই রেওয়াজে চিড় ধরাচ্ছে বলে বাম নেতৃত্বের বড় অংশেরই মত। এরই পাশাপাশি, দলের তরফে সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার কত দূর এগিয়েছে, তার চিত্র রাজ্য সম্মেলনে তুলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়া টিমের প্রতিনিধি।
সিপিএমে এখন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক জন সদস্য জেলা স্তরে সোশ্যাল মিডিয়া টিমের সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন। রাজ্য স্তরে ওই দায়িত্ব রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের। রাজ্য সিপিএমে এখন ওই দায়িত্বে মহম্মদ সেলিম। তিনি এ বার দলের রাজ্য সম্পাদক হয়ে যাওয়ায় সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের উপরে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত। সেই সঙ্গেই ‘বিশৃঙ্খলা’ এড়াতে বাড়তে পারে নজরদারিও। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আরও অনেক কিছুর মতো সোশ্যাল মিডিয়ারও ভাল ও খারাপ দুই দিকই আছে। নিজেদের প্রচার আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে এবং প্রতিপক্ষের প্রচারের জবাব দিতে সোশ্যাল মিডিয়াকে কার্যকরী ভাবে ব্যবহার করার উপযুক্ত কৌশলই নিতে হবে। ব্যক্তির প্রচার এখানে একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy