Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Ashok Bhattacharya

শিলিগুড়ি-কাণ্ডে ঘরে, বাইরে বিপাকে সিপিএম

করোনা পরিস্থিতিতে ভোট করা সম্ভব নয় বলে কলকাতা পুরসভায় বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে পুরনো মেয়র পরিষদকেই প্রশাসকমণ্ডলীতে বসানো হয়েছে।

শিলিগুড়ি পুরসভার বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

শিলিগুড়ি পুরসভার বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০১:১৯
Share: Save:

তাঁদের দাবি মেনে প্রশাসকমণ্ডলী থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সরিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার। ‘নৈতিক জয়’ দাবি করে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতিতে অশোকবাবুদের ওই সিদ্ধান্ত বিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছে সিপিএমকে! শিলিগুড়ি-কাণ্ডের জেরে বামফ্রন্টের অন্দরে শরিক আরএসপি বা বাইরে জোটসঙ্গী কংগ্রেস ক্ষুব্ধ। তারা মনে করছে, প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করেও পাঁচ বছর বোর্ড চালিয়ে অশোকবাবু যে ভাবমূর্তি অর্জন করেছেন, এখন সরকারের মনোনীত পদে গিয়ে সেই সঞ্চয়কেই বিপন্ন করে তোলা হল!

করোনা পরিস্থিতিতে ভোট করা সম্ভব নয় বলে কলকাতা পুরসভায় বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে পুরনো মেয়র পরিষদকেই প্রশাসকমণ্ডলীতে বসানো হয়েছে। আইনি প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ওই ব্যবস্থার ‘নীতিগত বিরোধিতা’ করেছিল বামফ্রন্ট। এখন শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে একই ব্যবস্থা মেনে নেওয়ায় জনমানসে ভুল বার্তা যাবে বলে করছে সিপিএম ও বামফ্রন্টের একাংশ এবং কংগ্রেস। তৃণমূলকে ঠেকাতে বাইরে থেকে বাম বোর্ডকে শিলিগুড়িতে সমর্থন দিয়েছিল কংগ্রেস। স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন বলতে শুরু করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ‘বদান্যতা’ মেনে নিয়েই প্রশাসক বোর্ড চালাতে হলে আগের লড়াই অনেকটাই মূল্যহীন হয়ে যায়। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা, অশোকবাবুরা সরকারি ব্যবস্থা মেনে নেওয়ায় বিজেপির প্রচার চালাতে সুবিধা হবে যে, সিপিএম ও কংগ্রেস আসলে তৃণমূলের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ করেই চলে। রাজ্যে প্রকৃত বিরোধী তারাই।

পরিস্থিতি যে তাঁর কাছে শাঁখের করাতের মতো, তা অস্বীকার করছেন না অশোকবাবুও। তবে তিনি বলছেন, ‘‘কঠিন পরিস্থিতিতেও দায়িত্ব ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। এখনও ছেড়ে পালাব না বলেই এই প্রশাসকের দায়িত্ব স্বীকার করেছি!’’

আরও পড়ুন: লকডাউনের মধ্যেই গুলি-বোমা, তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ সোদপুরে

শিলিগুড়ির যে পুরবোর্ডের মেয়াদ রবিবার শেষ হল, তার ডেপুটি মেয়র পদে ছিলেন আরএসপি-র রামভজন মাহাতো। আরএসপি-র জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামী দলের রাজ্য নেতৃত্বকে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, নীতিগত কারণেই প্রশাসকের দায়িত্ব মেনে নেওয়া উচিত নয়। তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সরিয়ে নিয়ে রাজ্য নতুন নির্দেশিকা দেওয়া মাত্রই যে ভাবে অশোকবাবুরা তা স্বীকার করে নিয়েছেন, তা নিয়ে বামফ্রন্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য। তাঁদের দাবি মেনে বিমান বসু কাল, মঙ্গলবার ফ্রন্টের বৈঠক ডেকেছেন।

পুরমন্ত্রী ফিরহাদকে গত ৯ মে তারিখে লেখা অশোকবাবুর একটি চিঠি বাম শিবিরের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হলে পুর-আইনের কোন ধারায় সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেই চিঠিতে তা উল্লেখ করেছিলেন বিদায়ী মেয়র। এমনকি, মেয়র পারিষদদের নামের তালিকাও চিঠিতে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। সিপিএম এবং ফ্রন্টে অনেকেরই প্রশ্ন, তার মানে কি বিদায়ী বোর্ডই প্রশাসক হিসেবে ফিরে আসতে আগ্রহী ছিল?

অশোকবাবু অবশ্য বাখ্যা দিচ্ছেন, ‘‘এখন রাজ্য সরকার কোনও পুরসভায় সরকারি আধিকারিকদের প্রশাসক না করে রাজনৈতিক নিয়োগ করছে। আবার করোনার জন্য ভোটও এখন সম্ভব নয়। তা হলে আমরা দায়িত্ব প্রত্যাখ্যান করার পরে যদি তৃণমূলের লোকজনকে দিয়ে প্রশাসক বোর্ড গড়ে দেওয়া হত, তখন তো ভোট না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আরও কঠিন অবস্থায় থাকতে হত?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ashok Bhattacharya Siliguri CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy