—প্রতীকী ছবি।
আসন নয়, ভোটের হিসেবেই চোখ রেখেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। পঞ্চায়েত ভোটে ‘প্রহসনে’র অভিযোগ করলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের হিসেবেই লড়াইয়ের জমি খুঁজে পাচ্ছে তারা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের একটি হিসেব অনুযায়ী, পঞ্চায়েতে এ বার প্রায় ১৪% ভোট পেয়েছে বামফ্রন্ট। কংগ্রেস পেয়েছে ৬.৪২%। সেই সঙ্গে কিছু ভোট আছে নওসাদ সিদ্দিকীর দল আইএসএফেরও। এই তিন পক্ষকে এক বন্ধনীতে রাখলে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপরীতে অ-বিজেপি বিরোধী শক্তির জমি অল্প অল্প করে মজবুত হচ্ছে, এমনই মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথের হিসেব থেকেই আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের রসদ খুঁজছেন তাঁরা।
সিপিএমের এই মূল্যায়নের কারণ ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে এ বারের পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত পাঁচ বছরের রাজনৈতিক যাত্রাপথেই নিহিত আছে। গত বার পঞ্চায়েতে সিপিএম একক ভাবে ১২%-এর কিছু বেশি ভোট পেয়েছিল, এ বারও তারা পেয়েছে কাছাকাছি। কিন্তু মাঝে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তারা আসনের নিরিখে শূন্য হয়ে গিয়েছিল। কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে ধরলেও তখন ভোটপ্রাপ্তি নেমে এসেছিল ১০% -এ। এই পঞ্চায়েতে সেই সম্মিলিত হিসেবই আবার গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১%-এ। অর্থাৎ দু’বছর আগে একেবারে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরে এখন প্রায় ১১% ভোট বাড়ানো গিয়েছে। এখানেই ইতিবাচক রসদ পাচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
বামেদের উৎসাহিত হওয়ার আরও কারণ, গত বিধানসভা ভোটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে এই দু’বছরেই বিজেপির ভোট কমেছে প্রায় ১৫%। পঞ্চায়েতে আসন-জয়ে তাদের চেয়ে বিজেপি অনেক এগিয়ে থাকলেও গেরুয়া শিবিরের ভোট হ্রাসের সঙ্গে নিজেদের বৃদ্ধি মিলিয়ে দেখে বিরোধী পরিসরে লড়াইয়ের জমি পাচ্ছে বামেরা। তার ভিত্তিতেই লোকসভা ভোটের জন্য বাম শিবির প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছে এখন থেকেই।
এই আবহে পঞ্চায়েতে ভোট লুট এবং ভাঙড়ে পুলিশের গুলিতে ‘হত্যাকাণ্ডে’র প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবারই পথে নামছে বামেরা। ধর্মতলা থেকে এন্টালি পর্যন্ত আজ মিছিলের ডাক দিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি-বিরোধী সব রাজনৈতিক দল এবং ‘শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিক’দের সেখানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সিপিএম সূত্রের খবর, সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে কংগ্রেস এবং আইএসএফ। তারা মিছিলে শামিল হলে গত বিধানসভা ভোটের সময় থেকে এই প্রথম বার তিন পক্ষকে একসঙ্গে রাস্তায় দেখা যাবে।
পঞ্চায়েত ভোটে অজস্র রকমের কারচুপি ও বেনিয়মের অভিযোগের পরেও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলছেন, ‘‘তৃণমূল বনাম বিজেপি যে দ্বৈরথ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যে তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল, তা ভেঙে গিয়েছে। এই নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে বাংলার সাধারণ মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছেন। এখান থেকেই নতুন লড়াই শুরু হবে।’’
সিপিএম নেতৃত্বের মতে, শান্তিপুর ও বালিগঞ্জে বিধানসভা উপনির্বাচন থেকে ধীরে ধীরে বামেদের ভোট বাড়তে শুরু করেছিল। পুরসভা ভোটে সেই প্রক্রিয়াই বজায় ছিল। আর সাগরদিঘির বিধানসভা উপনির্বাচনে ফসল ঘরে তোলা গিয়েছিল। পঞ্চায়েতের পরে এই লড়াই-ই ত্বরান্বিত হবে বলে তাঁদের আশা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘নির্বাচন ঠিকঠাক হলে অনেকের অনেক হিসেবই বদলে যাবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy