প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয়ের পরেও আগ বাড়িয়ে জোট ভাঙার পদক্ষেপ করতে উৎসাহী নন সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমন ভরাডুবির পরে দু’দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই জোটের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু দু’দলের নেতৃত্বই মনে করছেন, এ বারে বাংলার রায় বিজেপিকে রুখতে ‘কৌশলগত ভোটের’ ফল। যার সুবিধা তৃণমূল পেয়েছে। এই ফলের সঙ্গে জোট থাকা বা না থাকার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের পর্যালোচনা বৈঠক শুরু হয়েছে শনিবার। ভোটের পরে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রথম বৈঠকও এ দিন বসেছিল বিধান ভবনে। দুই বৈঠকেই দু’দলের কিছু নেতা জোটের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে একা চলার পক্ষে সওয়াল করেছেন। আবার জোট রেখে চলার পক্ষেও মত উঠে এসেছে। কংগ্রেসের বৈঠকে স্বয়ং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জোটের সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাট ধরেছেন। আবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁদের দলের রাজ্য কমিটির প্রারম্ভিক ভাষণে বার্তা দিয়েছেন, জোট ছেড়ে তাঁরা বেরিয়ে যেতে চান না। বিধানসভার দু’টি আসনের বকেয়া ভোট ও কয়েকটি আসনের উপনির্বাচনে আগে যে যেখানে প্রার্থী ছিলেন, সেই ভাবেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি।
প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে এ দিন প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, নেপাল মাহাতোরা ছিলেন না। সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) রায় চৌধুরী, প্রাক্তন বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী, শঙ্কর মালাকার, অসিত মিত্রেরা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। দুর্যোগের কারণে বৈঠকে আসতে পারছেন না বলে জেলা সভাপতিদের অনেকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। বিধান ভবনের ওই বৈঠকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছেড়ে কংগ্রেসের একা চলার কথা ওঠে। অন্য একাংশ আবার গত পাঁচ বছরের পথ বজায় রেখে বামেদের সঙ্গে নিয়ে চলার কথাই বলেন। বৈঠকে প্রদেশ সভাপতি অধীরবাবু ব্যাখ্যা দেন, বিজেপিকে আটকানোর জন্য কৌশলগত ভোট হয়েছে এ বার। সংখ্যালঘুরা মনে করেছেন, নরেন্দ্র মোদীর দলকে হারাতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম ও কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ হলেও তারা জিততে পারবে না, এই ধারণা মানুষের মধ্যে কাজ করেছে। প্রদেশ সভাপতি উদাহরণ দেন, ২০১৬ সালে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধেই কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছিল। আবার ২০১৯ সালে আলাদা লড়ে কংগ্রেস সুবিধা করতে পারেনি। কাজেই জোট ভাঙার যুক্তি জোরালো নয়। তবে এআইসিসি কী নির্দেশ দেবে, তা পরের কথা।
পরে অধীরবাবু বলেন, ‘‘জোট যে জায়গায় ছিল, সেখানেই আছে। নতুন করে কিছু হয়েছেও বলছি না, জোট নেইও বলছি না। দলের মধ্যে আলোচনা চলছে।’’ তবে আইএসএফের সঙ্গে যে তাঁদের জোট ছিল না এবং জোট বলতে তাঁরা শুধু বামেদের কথাই বলছেন, তা-ও ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন অধীরবাবু।
সিপিএমের রাজ্য কমিটিতেও একাধিক জেলার নেতারা আইএসএফের সঙ্গে জোটের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছেন। বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ কয়েকটি জেলার প্রতিনিধিরা বলেছেন, জোট সংক্রান্ত রাজনৈতিক কৌশল এখন নতুন করে বিবেচনা করা উচিত। তবে এ সবের আগেই রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু জোটের পক্ষে বার্তা দিয়েই জানিয়ে দিয়েছেন, সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য তাঁর সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টে সাঁইবাড়ি-কাণ্ড নিয়ে অনেক সঠিক তথ্য দিলেও এই সময়ে এই বিতর্কের কোনও প্রয়োজন ছিল না। যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট অন্য কেউ ‘হ্যান্ডল’ করে বিতর্কিত পোস্ট দিয়ে দিলে তা-ও উদ্বেগের বিষয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে অনলাইনেই উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিটবুরো সদস্য মানিক সরকারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy