ছবি: সংগৃহীত।
হারানো ভোট সামান্য হলেও ফেরার ইঙ্গিত মিলছে। এক মাসের ব্যবধানে দু’দফার নির্বাচন থেকে এই ইঙ্গিত পড়ে নিয়েই জোটের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে চাইছে সিপিএম ও কংগ্রেস। রাতারাতি কোনও চমকের আশা না করলেও আসন্ন পুরভোটে স্থানীয় স্তরে কিছুটা জমি উদ্ধার করাই আপাতত দু’দলের সামনে লক্ষ্য।
মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে গত মাসের ভোটে কংগ্রেস ৩৭% ভোট পেয়েছিল। আর সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচনে শান্তিপুর কেন্দ্রে প্রায় ২০% ভোট পেয়েছে সিপিএম। ঘটনাচক্রে, ওই দুই কেন্দ্রেই জোট ছিল না। কিন্তু প্রার্থী দিয়েও শমসেরগঞ্জে সিপিএম বা শান্তিপুরে কংগ্রেস সুবিধা করতে পারেনি। এই ফলের জেরে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশে চর্চা শুরু হয়েছে, তা হলে কি জোট ছাড়া লড়লেই এলাকা বিশেষে সিপিএম ও কংগ্রেসের লাভ হচ্ছে? দু’দলের রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, বিধানসভা ভোটের সময় থেকে রাজ্যে বিজেপির জমি আলগা হচ্ছে। যার গতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে উপনির্বাচনে। এই পরিস্থিতির ফায়দা নিয়ে বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের হারানো পরিসর ফিরে পেতে হলে জোট বেঁধে লড়াই করাই শ্রেয়। তার জন্য দু’পক্ষের মধ্যে সুর্নিদিষ্ট আলোচনা দরকার।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বুধবার উপনির্বাচনের ফল নিয়ে প্রাথমিক পর্যালোচনা হয়েছে। বিজেপির ভোট কমে যাওয়া এবং বামেদের সঙ্গে তাদের দূরত্ব কমে আসাকেই ‘ইতিবাচক’ ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। তারই মধ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে সমীকরণের প্রশ্নে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করেই আমরা লড়তে চাই। ভবানীপুরে কংগ্রেসের লড়ার কথা ছিল। কিন্তু একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা সেখানে লড়েনি, আমাদের প্রার্থী দিতে হয়েছিল। আবার শান্তিপুরের পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা বলেছিলাম, ওই আসন আমাদের ছেড়ে দিতে। সেটা যে ভুল ছিল না, ভোটের ফলেই বোঝা গিয়েছে। এখন কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে, তারা কী করবে।’’ গোটা দেশে বিজেপি-বিরোধী লড়াই কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে যে হবে না, তা-ও উল্লেখ করেছেন সুজনবাবু।
প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, শমসেরগঞ্জ ও শান্তিপুরে ঐকমত্য না হলেও বামেদের সঙ্গে জোট রেখেই এগোনো উচিত। কলকাতা পুরসভায় দলের কো-অর্ডিনেটর সন্তোষ পাঠকের বিবাদী বাগ দফতর সংলগ্ন কালী পুজোর উদ্বোধনের ফাঁকে এ দিন প্রদীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘বিধানসভায় বাম ও কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি নেই— এই পরিস্থিতি যে মোটেই ভাল হয়, সেটা মানুষ বুঝতে শুরু করেছেন। শমসেরগঞ্জ ও শান্তিপুরে সেই ইঙ্গিত রয়েছে। বিজেপি কোনও বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প নয়, বোঝা যাচ্ছে। মানুষের পাশে থেকে বিকল্পের জায়গা নিতে হবে কংগ্রেস ও বামেদেরই।’’ তৃণমূল কংগ্রেস যে ভাবে কংগ্রেসকে আক্রমণ করছে, তাতে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন প্রদীপবাবুরা।
পুরভোটে বামেদের সঙ্গে জোট হবে কি না, তা ঠিক করার ভার আপাতত স্থানীয় নেতৃত্বের উপরে ছেড়ে রেখেছে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রদীপবাবুদের বক্তব্য, অধিকাংশ জেলা থেকে জোটের পক্ষেই বার্তা আসবে। সিপিএমও জেলা কমিটিগুলিকে বার্তা দিয়েছে, পুরসভার কোন কোন ওয়ার্ডে লড়াই করা যাবে, সেই সব এলাকা ও প্রার্থী চিহ্নিত করার। স্থানীয় স্তরের মনোভাব বুঝেই জোটের প্রশ্নে রাজ্য স্তরে পদক্ষেপের পক্ষপাতী বিধান ভবন ও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy