অপেক্ষা: করোনার টিকা নিতে এমনই ভিড় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। ছবি: বিনোদ দাস
রোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে শহরে। রোজ লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু সামাল দেওয়ার মতো প্রশাসনিক পরিকাঠামো কোথায় শিলিগুড়িতে, প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। ভোটের জন্য প্রশাসনিক কাজকর্মের অনেকটাই এখন নিয়ন্ত্রণ করছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি পুর প্রশাসনের মাথাতেও রাজনৈতিক নেতার বদলে বসানো হয়েছে সরকারি আধিকারিককে। এই দুইয়ের ধাক্কায় করোনা পরিস্থিতি সামলাতে পরিকল্পনা থেকে প্রয়োগ, সব কিছুতেই ফাঁক ধরা পড়ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। উল্টে ওষুধের জোগান, নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে বাড়তি খরচ, করোনা পরীক্ষা নিয়ে কালোবাজারির আশঙ্কা করছেন অনেকে।
শুক্রবার কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক এবং শিলিগুড়ি ফাইট করোনার তরফে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ড এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে কোভিড পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নানা দাবিদাওয়া জানানো হয়। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়ার দাবি, ‘‘গত সোমবার থেকে আগের মতো হোম আইসোলেশনে রোগীদের নজরদারি ও অন্য পরিষেবাগুলি চালু করা হয়েছে।’’ তবে মোবাইল কিয়স্ক চালু হয়নি। তা করার চেষ্টা চলছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা দেখভালের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমন্ত সহায় বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ থাকলে, তা জানালে সেই মতো নিশ্চয়ই দেখা হবে।’’
বিধানসভা ভোট ঘোষণা পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক ছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। এ দিন তিনি এবং দলের তরফে পুরসভার বর্তমান পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তিনি জানান, তাঁরা পুরসভায় প্রশাসক বোর্ডে থাকার সময় গত বছর কোভিড পরিস্থিতিতে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের নজরে রাখতেন। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পুরসভার পাঁচ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী সেই কাজ করেছেন। কেউ আক্রান্ত হলে সেই বাড়ি স্যানিটাইজ় করা হয়েছে। রোগীরা হাসপাতাল, সেফ হোম, নার্সিংহোমে ভর্তি হতে চাইলে অ্যাম্বুল্যান্সে করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন কারা কোথায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তা চিহ্নিত করে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, এখন এ সব কিছুই আর হচ্ছে না। সে সময় শহরের দুটি নার্সিংহোমের পরিকাঠামো গ্রহণ করে সরকারি উদ্যোগে কোভিড হাসপাতাল করা হয়েছিল। সেগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অশোকদের দাবি, ফের সেগুলি চালু করা হোক। টাস্ক ফোর্সের বৈঠক করে প্রতিদিন নজরদারি করা হত। জটিল পরিস্থিতির কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল টিম করা হয়েছিল। সে সব কিছুই আর করা হচ্ছে না।
কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক, শিলিগুড়ি ফাইট করোনার তরফেও ওই সমস্ত পরিষেবা দ্রুত চালুর দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আক্রান্তদের পরিবারের সদস্য এবং বয়স্কদের করোনা পরীক্ষার জন্য বাড়ি থেকে লালা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা, আক্রান্তদের বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা করা, শহরে লাগাতার সচেতনতা প্রচার করা, মাস্ক ব্যবহার না করলে জরিমানার মতো কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সংস্থার দুটোর তরফে অনিমেষ বসু, সন্দীপ সেনগুপ্তরা জানান, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তাঁরা অবিলম্বে শয্যা বাড়ানো, প্রতিষেধকের জোগান ঠিক রাখা, ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার, পালস অক্সিমিটারের কালোবাজারি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। কোভিডের চিকিৎসায় নার্সিংহোমগুলিতে মাত্রা ছাড়া বিল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে কোভিডের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা যাতে মেলে, সেই দাবিও জানানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, কালোবাজারির অভিযোগ দেখা হবে। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে কোভিড রোগীরা চিকিৎসা করাতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy