আক্রান্ত হওয়ার পর সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধর। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের স্কুলের বুথেই মার খেলেন সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধর এবং তাঁর দলের পঞ্চায়েত প্রার্থী। ছাপ্পা ভোট আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন তাঁর মা-ও। দু’টি ঘটনাতেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নেতা এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সিপিআইএম নেত্রী।
শনিবার এই ঘটনা ঘটে বালির নিশ্চিন্দা ঘোষপাড়ার মিথিলা বালিকা বিদ্যালয়ের একটি বুথে। দীপ্সিতা জানিয়েছেন, তিনি ওই স্কুলে এক সময় পড়াশোনা করেছেন। সেখানেই তাঁর ভোটকেন্দ্রও ছিল। শনিবার তিনি ওই স্কুলের বুথে ভোটারদের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময়ই এলাকার এক তৃণমূল নেতা তাঁর দলবল নিয়ে হাজির হন বুথে। দীপ্সিতার অভিযোগ, ওই নেতার নাম কল্যাণ দাস। তবে এলাকায় তিনি ‘কলম’ নামে পরিচিত। তাঁর নেতৃত্বেই হামলা চালানো হয় দীপ্সিতা এবং এলাকার সিপিএম পঞ্চায়েত প্রার্থী আশিস কংসবণিকের উপর। দীপ্সিতার কথায়, ‘‘ওই তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে একটি দল হামলা চালায়। দলের অধিকাংশই ছিলেন বহিরাগত। তাঁরা আমার দলের প্রার্থী আশিস কংসবণিক, তাঁর এজেন্ট এবং তাঁর দাদাকে মারধর করেন। ওঁদের পরিকল্পনা ছিল আমাদের মারধর করে বুথ দখল করার।’’ যদিও সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি বলেই জানিয়েছেন সিপিএম নেত্রী। দীপ্সিতা জানিয়েছেন, নিজেরা মারধর খেয়েও শেষ পর্যন্ত বুথ আগলে রাখতে পেরেছেন তাঁরা। পাল্টা মারধর খেয়ে ফিরে যান ওই তৃণমূল নেতা এবং তাঁর দলবল। তবে দীপ্সিতারা বুথ বাঁচাতে পারলেও তাঁর মা ছাপ্পা ভোট আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত হন।
দীপ্সিতা জানিয়েছেন তাঁর মা দীপিকা ধর হাওড়ার ৪১ নম্বর জেলা পরিষদের প্রার্থী। তিনি বীণাপাণি স্কুলে নিজের ভোটকেন্দ্রে যখন যান, তখন সেখানে ২০০ জন ঢুকে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিলেন। দীপ্সিতার অভিযোগ, ‘‘মা এবং তাঁর এজেন্ট শুভঙ্কর চক্রবর্তী বুথের ভিতরে ঢুকতেই তাঁদের উপর চড়াও হন দুষ্কৃতীরা। দু’জনকেই মারধর করা হয়।’’ দীপ্সিতার মায়ের চশমা ভেঙে যায়। ফোন ভেঙে গুঁড়ো করে দেয় শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। তাঁর এজেন্ট শুভঙ্করেরও হাত ভেঙে যায়, মাথাও ফেটে যায়। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় তাঁকে।
তবে দীপ্সিতা জানিয়েছেন, আঘাত লাগলেও তিনি বা তাঁর মা হাসপাতালে যাননি। কারণ, বুথ বাঁচানোটাই ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য। আক্রান্ত এজেন্টদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট চলাকালীন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকেই বুথ দখল, ভোট লুট এমনকি সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগও এসেছে। শনিবার ভোট চলাকালীন রাজ্যের অন্তত ৭টি জেলা থেকে ১২টি মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ, ভোট লুট, ব্যালট বাক্স নষ্ট করার ঘটনার অভিযোগের হিসাব রাখা যায়নি একটা সময়ের পর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy