Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

করোনা রোগীর  দেহ ৮ ঘণ্টা পড়ে রইল বাড়িতেই, প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ

করোনা রোগীর সৎকার নিয়ে এমন  টানাপড়েনের ঘটনা এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েক বার সামনে এল। এর আগে গাইঘাটা এবং কৃষ্ণনগরে ঘটেছে এমন ঘটনা।

জরুরি নথিপত্র না থাকায় সৎকারে দেরি, পুরসভার অসমর্থিত সূত্রের দাবি।

জরুরি নথিপত্র না থাকায় সৎকারে দেরি, পুরসভার অসমর্থিত সূত্রের দাবি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২১ ২০:০৯
Share: Save:

ফের করোনা আক্রান্ত রোগীর সৎকারে দেরির অভিযোগ। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া নিয়ে টালবাহানার জেরে ৮ ঘণ্টা বাড়িতে পড়ে রইল করোনা রোগীর দেহ। হাওড়ার শিবপুর বিধানসভার কেন্দ্রের এই ঘটনায় পরে পুলিশের উদ্যোগে ওই রোগীর সৎকার করা হয়।

রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ব্যাঁটরা থানা এলাকার কালীপ্রসাদ চক্রবর্তী লেনে। মৃতের নাম হরিধন ভট্টাচার্য। বয়স ৫৩। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, রবিবার সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ রোগীর মৃত্যুর পর থেকেই বিভিন্ন হেল্পলাইনে ফোন করে সৎকারের জন্য সাহায্য চান তাঁরা। কিন্তু সাহায্য চেয়েও সুরাহা মেলেনি। সৎকারের ব্যাপারে কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি হাওড়া পুরসভা কিংবা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। হরিধনের পুত্র শুভম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পরিষেবা না পেয়ে শেষে ব্যাঁটরা থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। শেষে পুলিশই উদ্যোগী হয়ে পুরকর্মীদের সাহায্যে সৎকারের ব্যবস্থা করে। মৃত্যুর প্রায় ৮ ঘণ্টা পর করোনা রোগীর সৎকারের ব্যবস্থা হয়। তবে অভিযোগের জবাবে পুরনিগমের তরফে অসমর্থিত সূত্রের দাবি, উপযুক্ত কাগজপত্র ঠিক সময়ে না পাওয়াতেই এই ব্যাপারে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।

শনিবার শিবপুরের বাসিন্দা মৃত হরিধনের পরিবার জানিয়েছেন, পুর নিগমের তরফে তাঁদের বলা হয়েছিল, করোনা রিপোর্ট ও ডেথ সার্টিফিকেট পেলে তবেই মৃতদেহ উদ্ধার করা হবে। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটও তাড়াতাড়ি হাতে না পাওয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। শেষে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ সহযোগিতা করে তাঁদের। আট ঘণ্টা পর পুর নিগমের কর্মীরা শববাহী গাড়ি নিয়ে এসে মৃতদেহ নিয়ে যায় সৎকারের জন্য।

করোনা রোগীর সৎকার নিয়ে এমন টানাপোড়েনের ঘটনা এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকবার সামনে এল। শনিবার ভোরে গাইঘাটা থানার চাঁদপাড়া ঢাকুরিয়া এলাকায় করোনা-আক্রান্ত কলকাতা পুলিশের এক প্রাক্তন কর্মী দুলালচন্দ্র মজুমদারের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর শনিবার সন্ধে সাড়ে ৬টায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর তাঁর সৎকারের ব্যবস্থা করে বলে অভিযোগ ছিল। তার আগে শুক্রবার কৃষ্ণনগরে দুই করোনা রোগীর দেহ একই ভাবে প্রশাসনিক সাহায্যের অভাবে ১৪ ঘণ্টার বেশি সময় বাড়িতে প়ড়ে ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই করোনা রোগীর দেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে বা এলাকায় পড়ে থাকায় সংক্রমণের ভয় ছ়়ড়িয়েছে এলাকায়।

শুভম জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছিলেন তাঁর বাবা। গত ২০ এপ্রিল একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তার করোনা পরীক্ষা হয়। ২১ তারিখ রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শনিবার তার শরীরে অক্সিজেনের স্তর কমে যাওয়ায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অক্সিজেন দেওয়ার পর রাতে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছিল হরিধনকে। সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। বাড়ির মধ্যেই তাকে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আজ সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর তার পরিবারের লোকেরা বিভিন্ন হেল্পলাইনে ফোন করে সৎকারের জন্য সাহায্য চাইলেও কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ তার ছেলে ব্যাঁটরা থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশের পক্ষ থেকেও সাহায্য করার চেষ্টা করা হয়। মৃতের সন্তান শুভম চক্রবর্তী জানান হাওড়া পুরসভা বা স্বাস্থ্য দফতর থেকে কোনো পরিষেবা পাওয়া যায়নি। ঘরের মধ্যে পড়ে ছিল মৃতদেহ। শেষ ৮ ঘণ্টা পরে পুলিশের উদ্যোগেই শেষকৃত্য হয় তাঁর।

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 COVID-19 protocols COVID Patients Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy