রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে তিন জনের গ্রেফতারি নিয়ে আদালতে বৃহস্পতিবার আবার প্রশ্নের মুখে পড়ল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। হিতেশ ছন্দক, সুব্রত ঘোষ এবং শান্তনু ভট্টাচার্যকে হেফাজতে নেওয়ার পরে গত ন’দিন ধরে জেরা করে নতুন কী তথ্য পেয়েছে ইডি, তা জানতে চেয়েছেন বিচারক। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁদের আরও পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইলে বিচারক জানান, সংবাদমাধ্যমের খবরের জন্য হেফাজতে পাঠানো যাবে না।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গত ২৩ ডিসেম্বর হিতেশ, সুব্রত এবং শান্তনুকে গ্রেফতার করে ইডি। হিতেশ এবং সুব্রত রাইস মিলের মালিক। শান্তনু ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সিএ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট)। তিন জনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের আরও পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চায় ইডি। তার পরেই বিচারক জানতে চান, গত ন’দিন তিন জনকে হেফাজতে রেখে কী তদন্ত করল ইডি? তাঁর কথায়, ‘‘এই অভিযুক্তদের এক বছর আগে জেরা করেছেন। এই ন’দিন জেরা করে নতুন কী তথ্য পেয়েছেন?’’
প্রসঙ্গত, এক বছর আগে হিতেশ, সুব্রত, শান্তনুর বাড়ি, অফিস, মিলে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তার পর থেকেই তাঁরা তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে ছিলেন। মাঝে কয়েক বার তিন জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিলেন তদন্তকারীরা। গ্রেফতারির পরে তাঁদের জেরা করে কী নতুন তথ্য পেয়েছে ইডি, বৃহস্পতিবার তা-ই জানতে চাইলেন বিচারক। তিনি আরও বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমের খবরের জন্য হেফাজতে পাঠানো যাবে না।’’
ইডির আইনজীবী সওয়াল করে জানান, তাঁদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। কিছু ডিজিটাল ডিভাইস রয়েছে, তা থেকে তথ্য নিতে হবে। বিচারক বলেন, ‘‘হেফাজতে নেওয়ার উদ্দেশ্য কী? কিছু প্রিন্ট আউট নেওয়ার থাকলে নিয়ে আসুন, তার পরে হেফাজতে নিন।’’ বিচারক এই প্রশ্নও করেছেন যে, গত এক বছরে ইডিকে যে বয়ান দিয়েছেন তিন জন, তার সঙ্গে হেফাজতে নেওয়ার পরে বয়ানের কি কোনও তফাত রয়েছে? ইডির আইনজীবী সওয়াল করে জানিয়েছেন, কালো টাকা কী ভাবে সাদা করা হয়েছে, তা তাঁদের নতুন বয়ানে উঠে এসেছে। এক অভিযুক্তকে জেরা করে আরও এক জনের কথা উঠে এসেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয়ের সিএ শান্তনুর আইনজীবী সওয়াল করে আদালতে বলেন, ‘‘আমার কাছে সংস্থার যে নথি এসেছিল, তার ভিত্তিতে মতামত দিয়েছি। কিছু প্রস্তুত করিনি। আমি ভাল সাক্ষী হতে পারি।’’ শান্তনুর আইনজীবী সাক্ষী হওয়ার শর্তও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইডিকে বলতে হবে, এই পাঁচ দিন হেফাজতে থাকার পরে আমার মক্কেল জামিনের আবেদন করলে তারা দাবি করবে না যে, তিনি কোনও তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারেন।’’ তিনি এ-ও দাবি করেছেন যে, ইডি আগে বলেছিল এটা ২০ কোটি টাকার দুর্নীতি। এখন বলছে, এটা ৯০০ কোটি টাকার দুর্নীতি।
এর আগে হিতেশ, সুব্রত এবং শান্তনুকে যখন আদালতে হাজির করানো হয়েছিল, তখনও তাঁদের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। বিচারকের প্রশ্ন ছিল, ‘‘এক বছর আগে তল্লাশি হয়েছে, বয়ান নেওয়া হয়ে থাকলে এত দিন পর গ্রেফতার করলেন কেন?’’ বৃহস্পতিবার আরও পাঁচ দিনের জন্য ইডি তাঁদের হেফাজতে চাইলে বিচারক আবার সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy