Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Corruption Case

বর্ষাতি দুর্নীতিতেও সমান্তরাল চার্জশিট দিতে চায় পুরসভা

পুরসভা সূত্রের খবর, বর্ষাতি কেনার জন্য টাকা এসেছিল সর্বশিক্ষা মিশন থেকে। নিয়ম অনুযায়ী, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা খরচের ক্ষেত্রে পুরসভার অর্থ দফতরের অনুমতি লাগে না।

An Image Of Kolkata Municipality

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:২১
Share: Save:

সাম্প্রতিক কালে কলকাতা পুরসভার শিক্ষা দফতরের দু’টি বড় দুর্নীতির একটি শৌচাগার, অন্যটি বর্ষাতি কেলেঙ্কারি। পুরসভার অন্দরের খবর, পড়ুয়াদের বর্ষাতি কেনার জন্য ডাকা দরপত্রের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছিল তৎকালীন পুর অর্থ দফতর। তত দিনে মেয়রের দায়িত্ব সামলাতে এসে গিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। দরপত্রের প্রক্রিয়ায় ‘ছাড়’ দিতে শিক্ষা দফতর তখন মেয়রের কাছে ফাইল পাঠালে তিনি সবটা দেখে ফাইলের উপরে ইংরেজি অক্ষরে ‘নো’ লেখেন। গত সপ্তাহে পুর কমিশনারের কাছে পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মেয়রকে অন্ধকারে রেখে তদানীন্তন শিক্ষা দফতর প্রায় ৭৪ লক্ষ টাকার বর্ষাতি কেনে।

পুরসভা সূত্রের খবর, বর্ষাতি কেনার জন্য টাকা এসেছিল সর্বশিক্ষা মিশন থেকে। নিয়ম অনুযায়ী, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা খরচের ক্ষেত্রে পুরসভার অর্থ দফতরের অনুমতি লাগে না। আর সেই নিয়মকে কাজে লাগিয়েই শিক্ষা দফতরের তদানীন্তন আধিকারিকেরা নিজেরাই বর্ষাতি কেনা শুরু করেন।

পুর কমিশনার বিনোদ কুমার সম্প্রতি পুর শিক্ষা দফতরের কাছে বর্ষাতি কেনার পুরো রিপোর্ট চেয়েছিলেন। গত সপ্তাহে সেই রিপোর্ট কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, শৌচাগার দুর্নীতি কাণ্ডের পাশাপাশি বর্ষাতি কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রেও পুর কর্তৃপক্ষ ‘অভিযুক্তদের’ বিরুদ্ধে সমান্তরাল চার্জশিট পেশ করতে চলেছেন। বছর কয়েক আগে দু’টি দুর্নীতি একই সময়ে ঘটেছিল। ইতিমধ্যেই শৌচাগার দুর্নীতি কাণ্ডে পুরসভার শিক্ষা দফতরের তদানীন্তন দায়িত্বপ্রাপ্ত চার আধিকারিক ও কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করতে চলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তদানীন্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, পড়ুয়াদের স্কুলের পোশাকের সঙ্গে বর্ষাতিও দেওয়া হবে। এর পরেই পুর শিক্ষা দফতর বর্ষাতি কেনার জন্য দরপত্রের প্রক্রিয়া শুরু করে। সূত্রের খবর, ওই প্রক্রিয়া নিয়ে পুর অর্থ দফতর আপত্তিও তোলে। পুরসভার তৎকালীন মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বর্তমানে মেয়র পারিষদ (রাস্তা)। তাঁর দাবি, ‘‘তদানীন্তন স্পেশ্যাল পুর কমিশনার (শিক্ষা) তাপস চৌধুরী ফাইল পাঠিয়েছিলেন। তাতে আমি সই করেছি।’’ এ প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত তাপস চৌধুরীকে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ করা হলে জবাব মেলেনি। বর্তমান মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) সন্দীপন সাহার বক্তব্য, ‘‘মেয়রকে অন্ধকারে রেখে যে পদ্ধতিতে বর্ষাতি কেনা হয়েছিল, তা অপরাধ। ওই দুর্নীতি ধরা পড়ায় মেয়রের নির্দেশ কমিটি গঠিত হয়েছে। ভিজিল্যান্সও তদন্ত করছে।’’

যদিও প্রশ্ন উঠেছে, মেয়র ও পুর কমিশনারকে অন্ধকারে রেখে কী ভাবেই বা ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২,০৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়েছিল? বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের প্রশ্ন, ‘‘মেয়রের নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রায় কোটি টাকার সামগ্রী কিনল শিক্ষা দফতর! অর্থাৎ, পুর প্রশাসন পরিচালনায় মেয়রের নিয়ন্ত্রণ নেই! এর যথাযথ তদন্ত হোক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Municpal Corporation Raincoat Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy