গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। রবিবারও রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হলেন ২ হাজারের বেশি মানুষ। এ দিন সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২২৭৮ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৪২ হাজার ৪৮৭। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। এই নিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১১১২।
স্বাভাবিক ভাবেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন এ ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগে রাজ্য প্রশাসন। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন প্রতিদিন বাড়ছে, তেমনই পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হারও বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। বৃহস্পতিবার এই সংক্রমণের হার ছিল ১২.৮%, শুক্রবার ছিল ১৪.৩%, শনিবার ১৬.৩% এবং রবিবার তা বেড়ে হয়েছে ১৬.৯%। এই চিত্র থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, টেস্ট হওয়া মানুষের মধ্যে সংক্রমণের প্রবণতা বাড়ছে। শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব দাবি করেছিলেন, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যদিও সংক্রমণের হার বৃদ্ধি নিয়ে যথেষ্টই উদ্বিগ্ন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা। রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া বুলেটিন অনুযায়ী, মোট ১৩ হাজার ৪৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্টে এসেছে ২ হাজার ২৭৮ জনের।
রাজ্যের সঙ্গে কলকাতাতেও সংক্রমণ কমার লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না, উল্টে প্রতিদিনই বাড়ছে। শুক্রবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছিলেন ছিল ৫৬৩ জন। শনিবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ৬৪৮ জন। আর রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬২ জন। এই নিয়ে কলকাতায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩,৩৪৪। কলকাতায় মোট মৃত ৫৭৬। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত প্রায় ৩৯ হাজার, মহারাষ্ট্রে মোট সংক্রমণ তিন লক্ষ ছাড়াল
শুধু কলকাতাই নয়, কলকাতার লাগোয়া দুই ২৪ পরগনাতেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তর ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪৪ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২, হাওড়ায় ১৯১ ও হুগলিতে ৮৫। উত্তরবঙ্গের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর (১৪২), মালদহ (৮৯) ও দার্জিলিং (৬৫)-এ ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়েও উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর (৬৫), পূর্ব বর্ধমান (৬৭), পশ্চিম বর্ধমান (৫১) ও পশ্চিম মেদিনীপুর (৪৩) নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের।
রাজ্যের মোট ৪২ হাজার ৪৮৭ কোভিড পজিটিভ জন রোগীর মধ্যে ২৪ হাজার ৮৮৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রবিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৩৪৪ জন। রাজ্যে সুস্থতার হার গত কালকের (৫৮.৫৪) থেকে সামান্য বেড়ে এ দিন হয়েছে ৫৮.৫৬ শতাংশ।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— লেখচিত্র ২ অর্থাত্ পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy